Advertisement
২৫ জানুয়ারি ২০২৫

টাওয়ার-বিকিরণ নিয়ে কেন্দ্রকে প্রশ্ন কোর্টের

মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ নিয়ে আশঙ্কা-আপত্তি নতুন ঘটনা নয়। সোমবার সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করল শীর্ষ আদালতও। মোবাইল ফোন বা টাওয়ারের ‘ক্ষতিকারক’ বিকিরণ থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে সর্বোচ্চ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৬
Share: Save:

মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণ নিয়ে আশঙ্কা-আপত্তি নতুন ঘটনা নয়। সোমবার সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করল শীর্ষ আদালতও। মোবাইল ফোন বা টাওয়ারের ‘ক্ষতিকারক’ বিকিরণ থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে সর্বোচ্চ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে জনবসতি বা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানোর শর্ত নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

আবেদনকারীদের আর্জি, মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে বিকিরণ-মাত্রা কমাতে টেলিকম মন্ত্রককে নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে জনবসতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাজার, অরণ্যের কমপক্ষে ৫০০ মিটারের মধ্যে মোবাইল টাওয়ার বসানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও চান তাঁরা। তাঁদের আরও আর্জি, বর্তমানে ওই দূরত্বের মধ্যে থাকা টাওয়ারও সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিক আদালত।

এর ভিত্তিতে কেন্দ্রের কাছে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের প্রশ্ন
• কতগুলি মোবাইল টাওয়ার টেলিকম মন্ত্রক পরিদর্শন করেছে?
• নিয়ম না মানলে কতগুলি টাওয়ার নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? বিকিরণ সংক্রান্ত শর্ত পালনের জন্য মোবাইল সংস্থাগুলিকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

টাওয়ারের বিকিরণ নিয়ে নানা ক্ষেত্র থেকে আপত্তি ওঠায় ২০১২-তে বিকিরণ মাত্রা একের দশ ভাগ করা হয়। সে সময় টেলিকম মন্ত্রকের একাংশ জানায়, বিকিরণ মাত্রা কমানোয় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিপত্তি কেটে যেতে পারে। কিন্তু সমস্যা হতে পারে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। কারণ, বিকিরণ মাত্রা কমালে একটি টাওয়ারের ‘কভারেজ’ এলাকা কমবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তড়িৎ-চৌম্বকীয় সংক্রান্ত প্রকল্পের প্রাক্তন প্রধান মাইকেল রেপাচোলির মতে, টাওয়ারের বিকিরণের প্রভাব মানব শরীরে কতটা পড়তে পারে, তা বিচার করেই বিকিরণ মাত্রার আন্তর্জাতিক মান স্থির করা হয়েছিল। ভারত তার থেকে বিকিরণ মাত্রা কমানোয় যোগাযোগ ব্যবস্থায় কুপ্রভাব পড়বে।

টেলিকম মন্ত্রকের একাংশের ওই দাবি সত্যি বলে মানছেন অনেকেই। কিন্তু তাঁদের মতে, এই বিকিরণ মাত্রা আদৌ কমানো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ভাস্কর গুপ্তের দাবি, বিকিরণ মাত্রা কমানো হয়েছে কি না, তা সরকার পরীক্ষা করে না। টেলিকম সংস্থাগুলিই নিজেদের শংসাপত্র দেয়। এই ব্যবস্থা কতটা স্বচ্ছ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ভাস্করবাবুর কথায়, ‘‘এই যে বিকিরণ মাত্রা এক ধাক্কায় একের দশ ভাগ করা হল, তা কি যথেষ্ট?’’ তিনি বলছেন, বিকিরণ মাত্রা কমানো হলে টাওয়ারের ‘কভারেজ’ এলাকা কমে। ফলে নেটওয়ার্ক দুর্বল হতে পারে। এই সমস্যা কাটাতে কম বিকিরণ মাত্রার বেশি টাওয়ার বসানো উচিত বলে তাঁর মত। তাঁর ব্যাখ্যা, কম বিকিরণ মাত্রার টাওয়ারে ক্ষতি হবে না। নেটওয়ার্কও জোরালো থাকবে।

টাওয়ারের বিকিরণ ক্যানসার ছড়াতে পারে বলে দাবি অনেকের। বিশেষজ্ঞরা জানান, মোবাইলের বিকিরণ থেকে ক্যানসার হয়েছে এমন প্রমাণ মেলেনি। টাওয়ারের কাছাকাছি থাকলে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিদেশে এ নিয়ে গবেষণাও চলছে। ক্যানসার শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মোবাইল টাওয়ার থেকে ক্যানসার হচ্ছে, এটা প্রমাণ করা যায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও তেমন নির্দেশিকা নেই। তবু টাওয়ারের বিকিরণ থেকে ক্যানসারের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

radiation SC mobile tower
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy