একই দিনে দু’বার জঙ্গি হানা এবং তারই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াই। এ ভাবেই উত্তর থেকে দক্ষিণ কাশ্মীর আজ উত্তপ্ত রইল দিনভর। উপত্যকার তিন প্রান্তে তিনটি পৃথক ঘটনায় এ দিন নিহত হন চার সেনা ও দুই জঙ্গি-সহ মোট সাত জন।
সোমবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলায় কাঞ্জিকুল্লার রাস্তায় তখন টহল দিচ্ছিল সেনাবাহিনী। তাদের লক্ষ্য করে প্রথম গুলি চালায় জঙ্গিরা। আহত হন ধর্ম রাম নামে এক জওয়ান। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তাঁর। জঙ্গি আক্রমণের মুখে পড়ে দ্রুত এলাকা ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী। এক ফলের বাগান দিয়ে পালানোর সময় সেনার ছোড়া পাল্টা গুলিতে মারা যায় এক জঙ্গি।
দিনের শুরুতে জঙ্গি হানায় কেঁপে ওঠে উত্তর কাশ্মীর। বারামুলার সোপোরের ইকবাল মার্কেটে এক টেলিফোন সংস্থার অফিস ছিল তাদের লক্ষ্য। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ জঙ্গিদের গুলিতে আহত হন ওই সংস্থার ৩ কর্মী। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা শ্রীনগরের হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শ্রীনগরের হাসপাতালে মৃত্যু হয় আহত মহম্মদ রফিকের। সাম্প্রতিক কালে টেলিফোন সংস্থার অফিস ও ফোনের টাওয়ারে জঙ্গি হামলার ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা আগে সোপোরেরই একটি বসতি এলাকায় মোবাইল টাওয়ারের উপর গ্রেনেড ছুড়েছিল জঙ্গিরা। কেন বেছে বেছে এগুলোকেই নিশানা করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, টেলি যোগাযোগ সংস্থাগুলি তাদের গোপন ডেরার হদিস পুলিশকে দিয়ে দিচ্ছে বলে এদের উপর রেগে রয়েছে জঙ্গিরা। চলতি মাসে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছু জিনিসও খোয়া গিয়েছে। সব মিলিয়েই খানিক বিপাকে পড়া জঙ্গিরা উপত্যকার সমস্ত টেলিফোন সংস্থাকে অফিস বন্ধের হুমকি দিয়ে গিয়েছিল। তাতেও কাজ না হওয়ায় জঙ্গিরা মোবাইল টাওয়ার ও সংস্থায় আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
জঙ্গি হানা ছাড়াও এ দিন সেনার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের খবর এসেছে কাশ্মীরের তাঙ্গধর সেক্টর থেকে। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনাবাহিনী যখন টহল দিচ্ছিল, সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে পড়ে তাদের। শেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দু’পক্ষের প্রবল গুলির লড়াই এখনও চলছে। তবে সেনা সূত্রের দাবি, অনুপ্রবেশকারীদের সীমান্তের ও-পারেই রুখে দেওয়া গিয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিন জওয়ান। গুরুতর আহত আরও এক জন। পাল্টা গুলিতে এক জঙ্গিও খতম হয়েছে বলে খবর।