সে এক আজব দোকান। থরেথরে সাজানো জিনিস। ভিড় ক্রেতাদেরও। কিন্তু নেই দোকানদার! জিনিস নিয়ে ক্যাশবাক্সে রাখতে হয় টাকাপয়সা। এমনই ‘সততার দোকান’ রয়েছে অসমের শিলচর সরকারি বালিকা উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। বই, খাতা, পেন, পেন্সিল থেকে চকোলেট, কেক, বাদাম, চানাভাজা, ফলের রসের প্যাকেটও— সবই রয়েছে সেখানে। ১৩ অগস্ট স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তীতে খোলা হয়েছে দোকান। প্রথম দিনই ২০০ টাকার জিনিস বিক্রি হয়। পর দিন ৬০০ টাকার। বুধবার বিক্রি হয় ৭২০ টাকার জিনিস। প্রতি দিন বিকেলে মজুত সামগ্রীর হিসেব মেলানো হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কোনও জিনিস হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ৫টি চকোলেট নিয়ে ৪টির দাম মেটানো হয়েছে— হয়নি তেমন কিছুও।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, ছাত্রীদের উপর তাঁদের পুরো ভরসা ছিল। তাই জেলা প্রশাসন প্রস্তাব দিতেই তাঁরা রাজি হয়ে যান। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার রাকেশকুমার মিনহাস নিজে ৪ হাজার টাকা জিনিসপত্র কিনতে দেন। কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন জানিয়েছেন, এটি তরুণ আইএএস মিনহাসেরই ভাবনা। ওই উদ্যোগ সফল হলে প্রশাসনের তরফে আরও কয়েকটি স্কুলে খুলবে ‘সততার দোকান’। বিশ্বনাথনের মন্তব্য, ‘‘এতে পড়ুয়ারা সততার শিক্ষা নিয়ে বড় হবে। বাড়বে লোভ সংবরণের ক্ষমতা। চরিত্র গঠনের সে এক বড় শিক্ষা।’’
আরও পড়ুন: ৫০ হাজার কোটি টাকা ফাঁকি!
ওই দোকান কেমন সাড়া ফেলেছে, তা দেখতে মিনহাস বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিলেন। অনেক সামগ্রী ফুরোতে দেখে তিনি খুশি। স্কুল কর্তৃপক্ষকে নতুন করে জিনিস কিনে আনতে বলেন। এখন অবশ্য আর মূলধনের প্রয়োজন নেই। বরং লাভের টাকায় সামগ্রীর পরিমাণ বেড়ে চলবে। তবে দোকানের জিনিসপত্র নিয়ে হতাশা রয়েছে। ছাত্রীদের একাংশের বক্তব্য— পছন্দের জিনিস নেই। চিপস, আচার, আইসক্রিম মিলছে না। অনেকে তাই ‘সততার দোকান’ ঘুরে গিয়ে স্কুলের গেটের সামনে থেকে ভাজাভুজি কিনছে। শিক্ষকরা বলেন— ‘এতে কিছু করার নেই। নামী সংস্থার সামগ্রী ছাড়া ছাত্রীদের কি আর ও সব খেতে দেওয়া যায়!’ সেখানেও তো ১০০ শতাংশ সততার নিশ্চয়তা চাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy