Advertisement
১০ মে ২০২৪
cremation

ছুঁতে আতঙ্ক, বাবার দেহ জঞ্জালের ট্রাকে

মহোবায় বছর পঞ্চাশের এক কোভিডে মৃতের দেহ জঞ্জালের ট্রাকে তুলে সৎকারের জন্য নিয়ে যায় পুলিশকর্মীরা।

প্রতীকী চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

কোথাও জঞ্জাল তোলার গাড়িতে মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শেষকৃত্যের জন্য। কোথাও আবার বাবার মৃতদেহে ছেলেরা হাত দেবেন না বলে জেসিবি-তে করে দেহ তুলে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে কবরে। কোথাও আবার চিকিৎসা না-পেয়ে মারা যাওয়া একরত্তি মেয়েকে কোলে নিয়ে কাঁদছেন বাবা। যা দেখে ‘এ আবার কী নাটক’ বলে স্বগতোক্তি করছেন এক পুলিশকর্মী। করোনা অতিমারির আবহে উত্তরপ্রদেশের ভেঙে পড়া চিকিৎসা ব্যবস্থা, মানুষের মনে তীব্র আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা জন্ম দিচ্ছে এমনই সব দৃশ্যের। যোগী রাজ্যের মহোবা, সন্ত কবির নগর ও বারাবঁকী— এই তিন জেলার তিন ছবি দেখে শিউরে উঠছেন দেশের মানুষ।

মহোবায় বছর পঞ্চাশের এক কোভিডে মৃতের দেহ জঞ্জালের ট্রাকে তুলে সৎকারের জন্য নিয়ে যায় পুলিশকর্মীরা। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, হাসপাতালের মর্গ থেকে কালো ব্যাগে ভরা দেহটি বার করে আনছেন দুই পুলিশকর্মী। তৃতীয় জন দেহটিকে একটি ময়লা ফেলার গাড়িতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে জেলা পুলিশ। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে ওই ব্যক্তির দেহ নিতে অস্বীকার করে ছেলেরা। তাঁরাই মৃতদেহটি সৎকারের জন্য নিয়ে যেতে জঞ্জালের ট্রাক ডাকেন।

সন্ত কবির নগর জেলার দ্বিতীয় ঘটনাটিও অনেকটা একই রকমের। কোভিডে মৃত্যুর পরে বাবার দেহ স্পর্শ করতে চাননি তিন ছেলে। তাই জেসিবি-তে করে দেহ নিয়ে যান কবরস্থানে। একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, জেসিবির সামনের অংশ থেকে বাবার দেহ কোনও মতে নামিয়ে গর্তে ফেলে দিচ্ছেন ছেলেরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ ছিল। কিন্তু বাবা বাড়ি ফিরতে চান। বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। কোভিডে মৃতের সৎকারের নিয়ম আমাদের জানা নেই। তাই জেসিবি ডাকি।’’

শুধু কোভিড নয়, কোভিড-আতঙ্কও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। বারাবঁকী জেলায় চিকিৎসা না-পেয়ে পাঁচ মাসের শিশুকন্যার মৃত্যু তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে। শিশুটির বাবার অভিযোগ, মেয়ে দোলনা থেকে পড়ে গিয়ে চোট পেলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কোভিডের আতঙ্কে কেউ ছুঁতে চাননি বাচ্চাটিকে। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মৃত শিশুকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন বাবা। সেখানে উপস্থিত একজন পুলিশকে এ-ও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘কী নাটক চলছে এখানে?’’ এ দিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটি আনার আগেই মারা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India cremation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE