Advertisement
E-Paper

জামাইয়ের দুর্নীতির অভিযোগ আড়াল করে বিতর্কে সনিয়া

ক্ষোভ উগরে নরেন্দ্র মোদীকে ‘শাহেনশা’ বলতে গিয়ে একটি বেনজির কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন সনিয়া গাঁধী। জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আড়াল করে বসলেন কংগ্রেস সভানেত্রী। এ যাবৎ রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ উঠলে কংগ্রেস তার থেকে দূরত্ব তৈরি করে বলত, রবার্ট বঢরা এক জন ‘প্রাইভেট সিটিজেন’।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৬ ১৭:০৬

ক্ষোভ উগরে নরেন্দ্র মোদীকে ‘শাহেনশা’ বলতে গিয়ে একটি বেনজির কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন সনিয়া গাঁধী। জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আড়াল করে বসলেন কংগ্রেস সভানেত্রী।

এ যাবৎ রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ উঠলে কংগ্রেস তার থেকে দূরত্ব তৈরি করে বলত, রবার্ট বঢরা এক জন ‘প্রাইভেট সিটিজেন’। তিনি কংগ্রেসের সদস্য নন। বড়জোর রবার্টের আইনজীবীর সাফাইকে সামনে রেখে কংগ্রেস মুখপাত্ররা উল্টে বিজেপিকে আক্রমণ করতেন। এক বার রাজীব-সনিয়া তনয়া প্রিয়ঙ্কা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে মুখ খুলে বলেছিলেন, যে ভাবে তাঁর পরিবারের উপরে আক্রমণ হচ্ছে, তাতে তিনি ‘ব্যথিত’। কিন্তু এ বারে খোদ সনিয়া গাঁধী রবার্টের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বললেন, ‘‘কংগ্রেস-মুক্ত ভারত করার জন্য রোজ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এটি ষড়যন্ত্র। তদন্ত হলে ‘দুধ কা দুধ, পানি কা পানি’ হয়ে যাবে।’’

রবার্টের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ উঠেছে, অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভাণ্ডারী সনিয়ার জামাইয়ের নামে একটি ‘বেনামি’ সম্পত্তি কিনেছিলেন ২০০৯ সালে। রবার্ট ও তাঁর সচিবের কিছু মেলের আদান-প্রদানে দেখা যাচ্ছে, সেই বাড়িটি মেরামতির জন্য টাকাপয়সা নিয়ে কথা হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। যদিও লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বাড়িটি এক বছরের মাথাতেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। অরুণ জেটলির অধীনে অর্থমন্ত্রক এখন গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। যদিও রবার্টের আইনজীবী গোটা অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রবার্ট বা তাঁর সচিবের সঙ্গে লন্ডনের ওই সম্পত্তি নিয়ে এই অস্ত্র ব্যবসায়ীর কোনও লেনদেন হয়নি।

আজ নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র রায়বরেলীতে গিয়েছিলেন সনিয়া। সেখানে মোদী সরকারের দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, ‘‘এমনটি আমি আগে কখনও দেখিনি। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, শাহেনশা নন।’’ বিজেপি সনিয়ার সফরের দিকে আগে থেকেই নজর রাখছিল। দলের মুখপাত্ররা ‘শাহেনশা’ কটাক্ষের জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতও ছিলেন এই বলে, আসলে ইন্দিরা গাঁধীর আমলে জরুরি অবস্থা আর কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রই আসল ‘শাহেনশা’র নমুনা। তা না হলে নরেন্দ্র মোদী তো নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নন, ‘প্রধান সেবক’ বলেন। কিন্তু এরই মধ্যে সনিয়াকে যখন রবার্টের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখনই তিনি ক্ষোভ উগড়ে বেনজির ভাবে রবার্টের পাশে এসে দাঁড়ান।

আর সেটাই নতুন অস্ত্র তুলে দেয় বিজেপির হাতে। রবার্ট বঢরাকে নিয়ে দলের এত দিনের অবস্থান থেকে খোদ কংগ্রেস সভানেত্রী সরে আসায় কংগ্রেস নেতারাও কিছুটা থতমত খেয়ে গিয়েছে। কিছু দিন আগে যন্তরমন্তরে পোস্টারে সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে রবার্ট বঢরার ছবি নিয়েও দলের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। দলের এক নেতার কথায়, আসলে নরেন্দ্র মোদী সরকার কোনও অকাট্য প্রমাণ ছাড়াই সুকৌশলে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আনছে। সম্প্রতি কপ্টার-দুর্নীতি নিয়েও সরাসরি সনিয়া গাঁধীকে নিশানা করা হয়েছে। এ বারে রবার্টের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ভাসিয়ে আসলে আক্রমণের লক্ষ্য সেই সনিয়া গাঁধীকেই করা হচ্ছে। সে কারণেই কংগ্রেস সভানেত্রীর ক্ষোভ বাইরে বেরিয়ে এসেছে।

পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কংগ্রেস এখন সেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহের যোগাযোগের খবর সামনে নিয়ে এসেছে। দলের অভিযোগ, সঞ্জয় ভাণ্ডারীর সঙ্গে ফোনে কথা ও এসএমএস বিনিময় হয়েছে সিদ্ধার্থের। এই অভিযোগের জবাব দিয়ে সিদ্ধার্থ অবশ্য বলেছেন, ‘‘এরও তদন্ত হোক। কিছু ফোন করা মানেই কোনও ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়া নয়। একটি সামাজিক যোগাযোগ। আমাদের সন্তানরাও এক স্কুলে যায়। কিন্তু কংগ্রেস জবাব দিক, সনিয়া গাঁধী এক জন ‘প্রাইভেট সিটিজেন’-কেও জনতার প্রতীক বলে মানছেন?’’

Sonia Gandhi Robert Vadra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy