আগরতলাতে শুরু হচ্ছে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন! —ফাইল চিত্র।
নতুন নাম পেয়েছে বিমানবন্দর। নতুন সরকারের আতিথেয়তায় উত্তর-পূর্বের পর্যটন উৎসব উপলক্ষে আলোর মালায় সেজেছে শহরটা। কিন্তু গোটা শহর ঢুঁড়ে ফেললেও কোথাও একটা লাল পতাকার দেখা নেই!
কে বলবে, রাত পোহালে এই আগরতলাতেই শুরু হচ্ছে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন! ক্ষমতা হারানোর পরে প্রথম বার।
রাজ্যে পট পরিবর্তনের পরে প্রায় ৯ মাস কেটে গেলেও পরিস্থিতি এমনই যে, একেবারে চুপিসারে রাজ্য সম্মেলন সারতে হচ্ছে বিরোধী দলকে। সম্মেলন উপলক্ষে সমাবেশ হচ্ছে না। সম্মেলনের কলেবরও কমিয়ে আনা হয়েছে দু’দিনে। এবং তার কোনও প্রচারও নেই। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ বলছেন, ‘‘দিন হোক বা রাত, যেখান সেখান থেকে হামলার খবর আসছে। সে সবের মোকাবিলা করব নাকি সম্মেলনের আয়োজনে মন দেব?’’
আগরতলার মূল শহরে ঢোকার আগে যুব আবাসে সম্মেলনের প্রতিনিধিদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু তা নিয়েও যথেষ্টই উদ্বেগে সিপিএম নেতৃত্ব। গন্ডাছড়ায় শুক্রবারই পাড়া বৈঠক করতে গিয়ে সিপিএম নেতা ধনঞ্জয় ত্রিপুরা ও তাঁর সঙ্গীরা গেরুয়া শিবিরের হামলার মুখে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে থানা ঘিরে হামলাকারীদের বিক্ষোভ শুরু হয়, তাদের হাতে তুলে দিতে হবে অভিযোগকারীদের! সিপিএম রাজ্য দফতর থেকে পুলিশের ডিজি-কে সব জানানো হয়। তার পরে অবশ্য স্থানীয় মানুষই পাল্টা জমায়েত করে ধনঞ্জয়দের থানা থেকে বার করে আনেন।
সিপিএমের বিদায়ী রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী আজ বিবৃতি দিয়ে অপরাধীদের শাস্তি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। সকালেই শহরে পৌঁছে প্রকাশ কারাট টের পেয়েছেন, পরিস্থিতি কত ‘উদ্বেগজনক’। পরে এসেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর মতে, ‘‘ফ্যাসিবাদী শাসকের যা যা কাজ, সবই এখানে চলছে।
এর মোকাবিলা করেই সামনে এগোতে হবে।’’
রবিবার আসার কথা আর এক পলিটবুরো সদস্য বিমান বসুর। ক্ষমতা হারানোর পরে কঠিন পরিস্থিতিতে কী ভাবে লড়াই চালাতে হয়, বাংলার বিমানবাবুর কাছে শুনতে চাইছে ত্রিপুরা সিপিএম।
ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের আমন্ত্রণ স্বীকার করে তাঁর বাড়িতে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। সেই ‘সৌজন্য’ নিয়ে বিতর্ক হয়নি। কিন্তু হামলাও থামেনি! রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজীব
ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। অধিকাংশ অভিযোগই ভিত্তিহীন।’’
গন্ডাছড়ার ধনঞ্জয়, বিলোনিয়ার তাপস দত্তেরা যদিও হাড়ে হাড়ে বুঝছেন, ডান্ডার মুখে দলের ঝান্ডা ধরে রাখা কত কঠিন! সম্মেলনে বদল আসার সম্ভাবনা দলের রাজ্য সম্পাদক পদে। তাতেও লোকসভার লড়়াইয়ে জমি পাওয়া যে দুরাশা, অস্বীকার করছেন না কেউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy