সকালবেলার শরীরচর্চার ক্লাসে আসেনি ১২ বছরের কিশোর। খোঁজাখুঁজি শুরু হতেই দেখা যায়, স্কুলের অদূরে পড়ে রয়েছে সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার নিথর দেহ! পাশেই পড়ে রয়েছে ‘সুইসাইড নোট’। তাতে লেখা, ‘সিনিয়র দাদারা আমাকে অনেক অত্যাচার করেছে। আমি জানি না আমি এখন কী করব।’’
গত ১ নভেম্বর অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সিয়াং জেলার সৈনিক স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। বুধবার সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োবার্তা পোস্ট করে মৃতের দিদি অভিযোগ করেছেন, স্কুলের সিনিয়র ছাত্রদের নির্যাতনের চোটে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে তাঁর ভাই। সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই নানা মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত আট ছাত্রকেও।
মৃত ছাত্রের দিদি তাদু লুনিয়া জানিয়েছেন, গত ১ তারিখ স্কুল থেকে তাঁদের ফোন করে জানানো হয়, তাঁর ভাই আত্মহত্যা করেছে। পরে ভাইয়ের সহপাঠীদের কাছে খোঁজ নিয়ে পরিজনেরা জানতে পারেন, মৃত্যুর আগের রাতেই সিনিয়রদের হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল ওই কিশোর ও তার বন্ধুদের। ভিডিয়োয় তাদু জানিয়েছেন, ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে অষ্টম ও দশম শ্রেণির একদল পড়ুয়া লুকিয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রাবাসে প্রবেশ করে। অভিযোগ, তার পর মৃত পড়ুয়া-সহ কয়েক জনকে কম্বলে মাথা ঢেকে দশম শ্রেণির ছাত্রাবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কী হয়েছিল সে বিষয়ে বিশদে জানা যায়নি। তবে সারা রাত ধরে যে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চলেছিল, তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন:
তাদু জানিয়েছেন, স্কুলপ্রাঙ্গণের সিসিটিভি ফুটেজে ভোর ৫টা ৪৫ নাগাদ তাঁর ভাইকে ছাত্রাবাসের চারপাশে উদ্বিগ্ন ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। দিদির দাবি, এর পর ভাই একটি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে সুইসাইড নোটটি লিখতে শুরু করে। ভিডিয়োয় তাদু বলেন, ‘‘ওর শেষ কথা ছিল, সিনিয়রেরা আমাকে অনেক নির্যাতন করেছে। আমি জানি না এখন আমি কী করব। আমি জানি কারা এতে জড়িত ছিল। আমি চাই অন্য কোনও পরিবারকে একই পরিণতি ভোগ করতে না হোক।’’
বৃহস্পতিবার অরুণাচল প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই আট জন ছাত্রকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার পাসিঘাটের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করানো হয়েছে তাদের। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ১৯৪ ধারার অধীনে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।