ছবি: সংগৃহীত।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস করবেন ঠিকই, কিন্তু এখনই কোনও নতুন নির্মাণ বা ভাঙাচোরার কাজ শুরু করা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল।
দিল্লির রাজপথের দু’পাশের এলাকা বা সেন্ট্রাল ভিস্টা ঢেলে সাজানোর প্রকল্পের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে। কিন্তু সেই মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই নতুন সংসদ ভবন তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই নতুন সংসদ ভবনের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেখানকার গাছ উপড়ে অন্যত্র রোপণের কাজ শুরু হয়েছে। ঠিক হয়েছে, ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস ও ভূমিপুজো করবেন।
সুপ্রিম কোর্ট নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ না-দিলেও কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই কাজ শুরু করে দেওয়ায় আজ সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিচারপতি এ এম খানউইলকর কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, “আমরা আপনাদের বিচক্ষণ ভেবে সম্মান দেখিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, আপনারাও আদালতকে সম্মান জানাবেন।”
এর পর বিচারপতিরা কেন্দ্রের কাছে জানতে চান, নতুন নির্মাণ, ভাঙাচোরা, গাছ কাটার কাজ বন্ধ করা হবে কি না। মেহতা কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য জানাতে এক দিন সময় চান। কিন্তু আদালত নির্দেশ দেন, পাঁচ মিনিটের মধ্যে জানাতে হবে। মেহতা সরকারি কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসে ক্ষমা চেয়ে জানান, কোনও নির্মাণ কাজ, ভাঙাচোরা হবে না। গাছ কেটে অন্য জায়গায় রোপণও বন্ধ থাকবে।
বিচারপতিরা বলেন, ১০ তারিখের নির্দিষ্ট শিলান্যাস কর্মসূচি চলতে পারে। কিন্তু তার পরে আর কোনও কাজ করা যাবে না। বিচারপতিদের বক্তব্য, পরে আদালতে এসে ‘ফেট অ্যাকমপ্লি’-যুক্তি দিয়ে বলা যাবে না যে, যে কাজ হয়েছে গিয়েছে, তা আর বদলানো সম্ভব নয়। আদালতের বক্তব্য, সরকারি স্তরে এই প্রকল্পের কাগজপত্রের কাজ চলতে পারে না। কোভিড অতিমারির মধ্যে কেন মোদী সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইছে, কেনই বা ৯৭১ কোটি টাকা খরচ করে এখনই নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের প্রয়োজন পড়েছে, তা নিয়ে বিরোধীরা সংসদেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এর বিরুদ্ধে প্রাক্তন সেনাকর্তা, পরিবেশ মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব-সহ একাধিক জন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সরকারের যুক্তি ছিল, পুরনো সংসদ ভবন ও বিভিন্ন সচিবালয়ের উপরে প্রবল চাপ পড়ছে। শীর্ষ আদালতের ধমকে আজ সলিসিটর জেনারেল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত সব কাজ বন্ধ থাকবে।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “আশা করি, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার যে রকম শুধুই রামমন্দিরের শিলান্যাস হবে, বাবরি মসজিদের কোনও ক্ষতি হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেন্ট্রাল ভিস্টার শিলান্যাস ও ভূমিপুজোর ক্ষেত্রেও সরকারি প্রতিশ্রুতির একই হাল হবে না।” সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ভূমিপুজোয় সব ধর্মের ধর্মগুরুরাই হাজির থাকবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy