Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Politics

মধ্যস্থতাতেই আস্থা, অযোধ্যা মামলায় তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করল সুপ্রিম কোর্ট

মধ্যস্থতাকারী নিযুক্ত করেই রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার নিষ্পত্তি চেয়ে আগেই সওয়াল করেছিল শীর্ষ আদালত। এ বার সেই পথেই হেঁটে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে তিন সদস্যের প্যানেল তৈরি করে দিল শীর্ষ আদালত।

তিন সদস্যের প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি খলিফুল্লা (মাঝখানে)। থাকছেন রবিশঙ্কর (বাঁ দিকে) ও শ্রীরাম পঞ্চু (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

তিন সদস্যের প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি খলিফুল্লা (মাঝখানে)। থাকছেন রবিশঙ্কর (বাঁ দিকে) ও শ্রীরাম পঞ্চু (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ১১:১৪
Share: Save:

রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মধ্যস্থতাকারী নিযোগের পথে আগেই হেঁটেছিল শীর্ষ আদালত। এ বার মধ্যস্থতাকারী হিসাবে তিন সদস্যের প্যানেল তৈরি করে দিল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ইব্রাহিম খলিফুল্লার নেতৃত্বাধীন ওই কমিটিকে আট সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন ধর্মগুরু রবিশঙ্কর এবং আইনজীবী শ্রীরাম পঞ্চু। চার সপ্তাহের মধ্যে মধ্যস্থতার অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।

ফৈজাবাদে মধ্যস্থতার প্রক্রিয়া চলবে। গোপনীয়তা বজায় রেখে মধ্যস্থতার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। মধ্যস্থতা চলাকালীন এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য প্রকাশ করা যাবে না সংবাদমাধ্যমে।

রাম জন্মভূমি ও বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত ৬০ বছরের পুরনো মামলার নিষ্পত্তির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় রোডম্যাপ তৈরির প্রস্তুতি নেয় সুপ্রিম কোর্ট। বুধবারই রঞ্জন গগৈয়ের সাংবিধানিক বেঞ্চ বলে, এই মামলাটির মূল ভিত্তি সম্পত্তি নয়। বরং, মধ্যস্থতাই শান্তি বজায় রাখার একমাত্র উপায়। ‘মন ও হৃদয়ের ক্ষতবিক্ষত হওয়া থেকে যদি রুখে দেওয়া যায়।’

বাবরি মসজিদ নিয়ে এই তথ্যগুলি জানতেন?

বুধবারের শুনানির পর উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং ‘রাম লালা’ কমিটি মধ্যস্থতার ব্যাপারে স্পষ্ট অনিচ্ছাপ্রকাশ করে। অন্য দিকে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, যারা মধ্যস্থতার ব্যাপারে তুলনায় আগ্রহী, তারা আলাপ আলোচনার সময়ে গোপনীয়তা নিয়ে বেশি চিন্তিত। হিন্দুদের মধ্যে নির্মোহী আখড়া রাজি থাকলেও হিন্দু মহাসভা এর বিরোধিতা করে যুক্তি দিয়েছে, এটা শুধু মামলাকারী দু’পক্ষের বিষয় নয়। দুই সম্প্রদায়ের সমস্যা। আমজনতা এই মধ্যস্থতা মানবে না।

আরও পড়ুন: সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে বৈঠকে জৈশ-লস্কর-হিজবুল, ভারতে হামলার ছক​

রামলালার আইনজীবী বলেছিলেন, ‘‘রামের জন্মস্থানেই মন্দির তৈরি করতে হবে। রাম যে অযোধ্যাতেই জন্ম নিয়েছিলেন, তা নিয়ে কোনও বিবাদ নেই। বিবাদ হল, সেই জন্মস্থান ঠিক কোথায়? রামের জন্মস্থান নিয়ে কোনও মধ্যস্থতা হতে পারে না।’’

আরও পড়ুন: পরকীয়া সম্পর্কের জন্য কি দায়ী মেগাসিরিয়ালও? প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট

এর পর আজ অর্থাৎ শুক্রবার এক সপ্তাহের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। ‘চূড়ান্ত গোপনীয়তা’-র মধ্যে মধ্যস্থতা পর্ব সম্পন্ন করতে হবে, এমনই নির্দেশ শীর্ষ আদালতের। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, চার সপ্তাহের মধ্যে কাজের অগ্রগতির প্রথম রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে গোটা মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এই মামলায় প্রধান বিচারপতি ছাড়াও সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এ এস বোদড়ে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস এ নাজির। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রবীণ বিচারপতি এ এস বোদড়ের পর্যবেক্ষণ, জমি নয়, বরং রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা ভাবাবেগ এবং বিশ্বাস’-এর।

এর প্রেক্ষিতেই সব পক্ষকেই মধ্যস্থতাকারীদের নাম প্রস্তাব করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে মধ্যস্থতাকারীদের নাম এ দিন চূড়ান্ত করেছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তবে এই মধ্যস্থতার সময়কালে সংবাদ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।

অযোধ্যা বিবাদে এর আগেও মধ্যস্থতার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে আপত্তি ওঠায় বিচারপতি বোদড়ে বুধবার বলেছিলেন, ‘‘আমরাও ইতিহাস জানি। অতীতের উপরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। কে হানা দিয়েছিল, বাবর কী করেছিলেন, কে সে সময় রাজা ছিলেন, সেখানে মসজিদ ছিল না মন্দির, সেই ইতিহাসের উপরে আমাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’

আদালতে দু’পক্ষের মধ্যস্থতা দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মানবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কী ভাবে মধ্যস্থতার দায় লক্ষ লক্ষ মানুষের উপরে চাপিয়ে দেব? এটা ততখানি সরল হবে না।’’ কিন্তু বিচারপতি বোড়দে বলেছিলেন, ‘‘যখন এক পক্ষ একটি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছে, তা আদালতের লড়াই হোক বা মধ্যস্থতা, তা মানতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Case Babri Masjid Supreme Court Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE