সবুজায়ন যেমন প্রয়োজন, তেমনই কোনও শহরের উন্নয়নও প্রয়োজন। তবে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে উন্নয়ন করতে গিয়ে নিয়ম না মেনে যেন গাছ কাটা না-হয়! এক মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। সর্বোচ্চ আদালত বলল, ‘‘আমাদের মৌলিক অধিকারের মতো উন্নয়নের অধিকারও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’’
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি প্রসন্ন বি ভারালের বেঞ্চ ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (এনজিটি) একটি নির্দেশ খারিজ করে উন্নয়নের পক্ষেই রায় দিয়েছে। এনজিটি ২০২২ সালের নির্দেশে উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজকর্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেই নির্দেশ খারিজ করে জানিয়েছে, এনজিটি ‘এক্তিয়ার ছাড়াই’ উন্নয়নের কাজের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। বিচারপতি ত্রিবেদী বলেন, ‘‘উন্নয়নের অধিকার এবং একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশের অধিকারের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করা উচিত।’’
পুদুচেরিতে অবস্থিত অরবিন্দ আশ্রমের কাছে রয়েছে এই অরোভিল সৈকত। স্বচ্ছ জল, শান্ত পরিবেশে কয়েক দিন সময় কাটাতে অনেকেই ওই সৈকতে পাড়ি দেন। অভিযোগ, উন্নয়নের নামে অরোভিল ফাউন্ডেশন প্রচুর গাছ কাটছে। তার বিরুদ্ধে এনজিটি-র দ্বারস্থ হয়েছিলেন নভরোজ মোদী নামে এক ব্যক্তি। তাঁর আবেদন ছিল, উন্নয়নের পরিকল্পনা এলাকার সবুজায়ন নষ্ট করবে। শুনানিতে অরোভিলের যুক্তি ছিল, এটি একটি ‘আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক শহর’ হিসাবে গড়ে উঠেছে। তাই এটিকে শুধু বনভূমি হিসাবে দেখা যাবে না।
আরও পড়ুন:
প্রস্তাবিত নির্মাণ কাজের বিষয়ে পরিকল্পনার কথা অরোভিল ফাউন্ডেশনকে জানাতে বলেছিল এনজিটি। এমনকি, কোনও নির্মাণের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতেও বলা হয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, যত দিন পর্যন্ত না প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি পূরণ হচ্ছে, তত দিন অরোভিল ফাউন্ডেশনের নির্মাণ কাজ স্থগিত থাকবে। সেই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়। শীর্ষ আদালত পরিবেশের ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখে উন্নয়নের পক্ষেই রায় দেয়।