১৬ বছরের ছাত্রকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে মদ খাইয়ে যৌন হেনস্থার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ৪০ বছরের ইংরেজির শিক্ষিকা। এ নিয়ে গত বুধবার থেকে মুম্বইয়ের একটি নাম করা স্কুলে শোরগোল চলছে। পুলিশি হেফাজতে ওই শিক্ষিকা দাবি করেছেন, শরীর নয়, ছাত্রের সঙ্গে তাঁর ‘প্রেম’ মনের। বস্তুত, তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তার জন্য অনুতপ্ত নন। অন্য দিকে, ছাত্রটিকে তিনি এক চিকিৎসক-বান্ধবীর কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে খাইয়েছিলেন। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
গত বুধবার মুম্বইয়ে গ্রেফতার হন বছর চল্লিশের এক মহিলা। পেশায় তিনি শিক্ষিকা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত এক বছর ধরে এক ছাত্রকে যৌন হেনস্থা করে আসছেন। কিছু দিন আগে ছাত্রটিকে একটি হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে নিজে মদ্যপান করেন এবং ছাত্রকেও মদ খাওয়ান। তার পরে যৌন হেনস্থা করেন। এখানেই শেষ নয়, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নাবালক ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে উদ্বেগ কমানোর ওষুধ খাওয়ান। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষিকাকে হাজির করানো হয়েছিল পকসো আদালতে। আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত বিচারক তাঁর পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত শিক্ষিকার মানসিক সুস্থতা পরীক্ষা করছে পুলিশ। চিকিৎসককে দিয়ে তাঁর ‘সাইকাট্রিক টেস্ট’-এর সময় বেশ কিছু কথা বলেছেন ধৃত। পুলিশের কাছে শিক্ষিকা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ছাত্রটিকে নিয়ে তিনি একটি পাঁচতারা হোটেলে যান। সেখানে দু’জনে মদ্যপান করেন। তিনি এ-ও দাবি করেছেন যে, তাঁদের অসমবয়সি সম্পর্ক শুধু শরীরের নয়। তিনি মন থেকে ছাত্রটিকে ভালবাসেন এবং ভবিষ্যতেও ছাত্রের জন্য তাঁর অনুভূতি একই থাকবে।
ওই শিক্ষিকা এবং ‘নির্যাতিত’ ছাত্রের সম্পর্ক সম্পর্কে স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পড়ুয়াকে যৌন হেনস্থার শুরু ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। আর ওই বছরের এপ্রিলে সংশ্লিষ্ট স্কুলের চাকরি ছাড়েন শিক্ষিকা। তিনি কি নিজের ইচ্ছায় চাকরি ছেড়েছিলেন না কি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টায় তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত শিক্ষিকা ওই স্কুলে যোগদান করেন করোনা পর্বে। ২০২১ সালে অতিমারির সময়ে স্কুলে যোগ দেওয়ার আগে অন্য একটি নাম করা স্কুলে ইংরেজি পড়াতেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, শিক্ষিকার পড়ানো প্রায় সকলেরই ভাল লাগত। আগে যে স্কুলে কর্মরত ছিলেন, সেই স্কুলেও শিক্ষিকার নামডাক ছিল। এই ছাত্রের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার শুরু ২০২৩ সালের শেষ দিকে। ছাত্রটিকে স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে নাচতে দেখে তাঁর প্রতি মুগ্ধতা বাড়ে শিক্ষিকার। তার পরে শুরু ‘প্রেমপর্ব।’
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, স্কুল ছাড়ার পরে শিক্ষিকার সঙ্গে ওই ‘নির্যাতিত’ পড়ুয়া যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিল। তখন নাকি এক চিকিৎসক-বান্ধবীকে দিয়ে ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতে থাকেন শিক্ষিকা। পরে ছেলেটির যখন শারীরিক অসুবিধা শুরু হয়, ওই বান্ধবীর পরামর্শেই ‘প্রেমিক’কে ওষুধ খেতে দেন শিক্ষিকা। সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। কিন্তু সেই চিকিৎসক এখন লন্ডনে।