E-Paper

শেষবেলায় ফাটল মেরামতের চেষ্টা, তেজস্বীই কি মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী

প্রশ্ন উঠেছে, সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই কি বিহারের বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তেজস্বী যাদবের নাম ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:২৯
তেজস্বী যাদব।

তেজস্বী যাদব। —ফাইল চিত্র।

খাদের ধার থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করল বিহারে বিরোধীদের মহাগঠবন্ধন। আরজেডি, কংগ্রেস ও অন্যান্য শরিক দলের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে অশান্তি তুঙ্গে ওঠার পরে এ বার জোটের ফাটল মেরামতে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করতে চলেছেন। তাতে বিরোধী শিবিরের সমস্ত শীর্ষনেতা উপস্থিত থাকবেন। সেখান থেকেই বিহারে বিরোধী জোটের নিজেদের মধ্যে লড়াই এড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচারে নামার বার্তা দেওয়া হবে।

প্রশ্ন উঠেছে, এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই কি বিহারের বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তেজস্বী যাদবের নাম ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে?

সূত্রের খবর, আসন বণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বিহারে প্রায় এক ডজন আসনে একাধিক বিরোধী দল প্রার্থী দিয়ে ফেলেছে। কোথাও আরজেডি ও কংগ্রেস, কোথাও কংগ্রেস ও সিপিআইয়ের মধ্যে লড়াই হতে চলেছে। বুধবার সকালে কংগ্রেসের নেতা ও বিহারের জন্য নিযুক্তপ্রবীণ পর্যবেক্ষক অশোক গহলৌত পটনায় পৌঁছচ্ছেন। তিনি ওই ডজনখানেক আসন নিয়ে তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানেই বৃহস্পতিবার বা ২৩ অক্টোবরের সাংবাদিক সম্মেলনে কী ঘোষণা হবে, তা চূড়ান্ত হবে। তার পরে শুক্রবার থেকেই তেজস্বী নতুন করে বিহারজুড়ে প্রচার শুরু করবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল ফোনে তেজস্বীর সঙ্গে কথা বলেন। তার পরেই গহলৌত ও বিহারের ভারপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণ অল্লাভুরুকে তেজস্বীর কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এত দিন কংগ্রেসের অবস্থান ছিল, বিরোধী জোট ক্ষমতায় এলে তার পরে ঠিক হবে, কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। এখন কি বিরোধী জোটের মধ্যে ক্ষত মেরামত করতেই লালু-পুত্র তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে?

বিহার কংগ্রেসের আরজেডি-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নেতা অখিলেশ প্রসাদ সিংহের জবাব, ‘‘‘ক্ষত মেরামত বলুন বা অন্য কিছু, বাস্তব হল, গণতন্ত্রে সংখ্যার জোরে প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী ঠিক হয়। বিরোধী জোটে আরজেডি-র কাছে সংখ্যা রয়েছে। আমরা কত দিন তা অস্বীকার করতে পারি? বাস্তবটা বলতে হবেই। কোনও বিকল্প নেই।’’

সূত্রের খবর, বিহারে ৬ ও ১১ অক্টোবর, দুই দফাতেই মনোনয়ন জমার পরে যা পরিস্থিতি তাতে ১২টি আসনে বিরোধীদের নিজেদেরমধ্যে লড়াই হতে পারে। আসন বণ্টন নিয়ে লড়তে গিয়ে বিরোধীদের প্রচার থেকে নজর সরে গিয়েছে।এই সুযোগে বিজেপি-জেডিইউবাড়তি ‘অ্যাডভান্টেজ’ পেয়েগিয়েছে, টের পাচ্ছেন বিরোধী নেতারা। অথচ এক মাস আগেও বিরোধী জোট মনে করছিল, রাহুল গান্ধী-তেজস্বী যাদবের ভোটার অধিকার যাত্রায় বিহারে বিপুল সাড়া মিলেছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনায় তাঁরা বিরোধী নেতারা বুঝতে পারছেন, আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে আরও পরিণতমনস্কতার পরিচয় দেখানো উচিত ছিল। অখিলেশ প্রসাদমানছেন, “আসন বণ্টন ও টিকিট বিলি, সব মিলিয়ে গন্ডগোল হয়েছে।’’ কংগ্রেসের বেশ কিছু নেতা মনে করছেন, রাহুল তাঁর আস্থাভাজন তেলুগু নেতা কৃষ্ণ অল্লাভুরুকে লালু-তেজস্বীর সঙ্গে দর কষাকষি করতে নামিয়ে ভুল করেছেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ কিছু আসনে প্রার্থী প্রত্যাহার, যৌথ প্রচারের ঘোষণা হতে পারে। যদিও ১২টি আসনের মধ্যে প্রথম দফার তিনটিতে ইতিমধ্যেই মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। বাকি আসনগুলিতে কী ভাবে সমঝোতায় পৌঁছনো যায়, তেজস্বীর সঙ্গে গহলৌতের বৈঠকে তার রাস্তা খোঁজা হবে। সেই সঙ্গে বিরোধীদের যৌথ প্রচারের রূপরেখাও তৈরি হবে। বিরোধী জোটের শরিক সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবি আজ বলেছেন, ‘‘মহাগঠবন্ধন মানুষের রুটিরুজির প্রশ্ন, বেকারত্বের মতো বিষয় বিহার নির্বাচনে তুলে আনছে। তার ফলেই মানুষেরসাড়া মিলছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bihar bihar election

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy