তেজস্বী যাদব ভোটার অধিকার যাত্রায় প্রায় ১৬ দিন পটনার বাইরে ছিলেন। যাত্রার শেষে বাড়ি ফিরতেই তাঁর সঙ্গে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত ভাগ্নের দেখা। তেজস্বী ভাগ্নের অনুরোধে তাঁকে নিয়ে সোমবার রাতেই গঙ্গার ধারে পটনার মেরিন ড্রাইভে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন। দেখা হয় কয়েক জন তরুণ-তরুণীর সঙ্গে। তাঁরা গানের সঙ্গে ‘রিল’ বানাচ্ছেন। তেজস্বী নিজেও তাঁদের সঙ্গে নাচের তালে পা মেলান। তার পরে রাস্তার ধারেই আড্ডা দিতে বসে পড়েন।
দ্বারভাঙার তরুণ ব্যবসায়ী শুভম সৌরভ সোমবার সাতসকালেই পটনায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। কংগ্রেসের তরফ থেকে তাঁকে ফোনে তেমনই বলা হয়েছিল। ভোটার অধিকার যাত্রা যখন দ্বারভাঙার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, সে সময় রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদব ‘বাইক র্যালি’ করেছিলেন। কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষী শুভমের বাইক ধার করে নিয়ে যান। কিন্তু মিছিলে সেই বাইক হারিয়ে যায়। সোমবার রাহুল নিজে তরুণ শুভমের হাতে নতুন বাইকের চাবি তুলে দিয়েছেন। শুভম খুশি মনে পটনা থেকে দ্বারভাঙা রওয়ানা হয়েছেন।
রাহুল ও তেজস্বী বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে ঠিক এই তরুণ প্রজন্মের ভোটই নিজেদের ঝুলিতে টানতে চাইছেন। কংগ্রেস ও আরজেডি-র নেতারা বলছেন, ভোটার অধিকার যাত্রা শুরু হয়েছিল বিজেপি-নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’ বা ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে। রাহুল-তেজস্বী সাসারাম থেকে পটনায় বোঝাতে চেয়েছেন, ভোটের অধিকার চলে যাওয়ার অর্থ চাকরি, সংরক্ষণ, শিক্ষা, জমি, রেশন কার্ড— সব কিছু চলে যাওয়া। ভোটার অধিকার যাত্রার শেষে জনসভায় তাই রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘‘ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পরে বিজেপি জমিজমাও কেড়ে নিয়ে আদানির হাতে তুলে দেবে।’’
এই তরুণ প্রজন্মের ভোটকে পাখির চোখ করেই রাহুল, তেজস্বী ভোটার অধিকার যাত্রায় বারবার জিপ থেকে নেমে এসে মোটরবাইকে সওয়ার হয়েছেন। পটনায় মেরিন ড্রাইভের আড্ডায় তেজস্বী বলেছেন, তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় শিল্প নীতি তৈরি হয়েছিল। পর্যটন নীতি তৈরি হয়েছিল। বিহারে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হলে, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের খোঁজে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া বন্ধ করতে হলে, এই শিল্পনীতি কার্যকর করতে হবে। লালুপ্রসাদের কন্যা, তেজস্বীর বোন রোহিণী আচার্যের যুক্তি, ‘‘বিহারের যুবক-যুবতীরা পরিবর্তন চান। তরুণ প্রজন্মের তেজস্বীর নেতৃত্বেই বিহারের অগ্রগতি চান। বিহারে এখন নতুন নেতৃত্ব, নতুন ভাবনা দরকার।’’
কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, রাহুলও বিহারের ভোটে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানকেই মূল বিষয় করতে তুলতে চাইছেন। তাই ভোটার অধিকার যাত্রার মধ্যেই তিনি জামালপুরে রহমানি ফাউন্ডেশনে গিয়েছিলেন। যেখানে হাজার হাজার পড়ুয়া ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভর্তি-পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ নেন। বিজেপির পাল্টা যুক্তি, কেন্দ্রের মোদী সরকার ও বিহারে এনডিএ সরকারের ‘ডাবল ইঞ্জিন’-এই বিহারে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সম্ভব।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)