Advertisement
E-Paper

Rahul Gandhi: তৈরি হচ্ছে মঞ্চ, কংগ্রেসের দায়িত্ব নিতে রাহুল কি প্রস্তুত?

রবিবার চিন্তন শিবিরের শেষে রাহুল গান্ধী দলের নেতানেত্রীদের বললেন, “আপনাদের সঙ্গে আমি লড়াইয়ে নামতে চলেছি।’’

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ০৬:৩১
 শ্রোতা: মঞ্চে তখন বক্তা রাহুল গান্ধী। শুনছেন মা সনিয়া গান্ধী। রবিবার উদয়পুরে।

শ্রোতা: মঞ্চে তখন বক্তা রাহুল গান্ধী। শুনছেন মা সনিয়া গান্ধী। রবিবার উদয়পুরে। ছবি পিটিআই।

গত দু’দিনে চিন্তন শিবিরে নৈশভোজের সময়ে রাহুল গান্ধী বিভিন্ন টেবিলে ঘুরে ঘুরে দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। অনেকেই অনুরোধ করেছেন, ‘‘রাহুলজি, আপনি আবার কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নিন।’’

রবিবার চিন্তন শিবিরের শেষে রাহুল গান্ধী দলের নেতানেত্রীদের বললেন, “আপনাদের সঙ্গে আমি লড়াইয়ে নামতে চলেছি। বিজেপি, আরএসএসের মতাদর্শকে আমরা হারিয়ে দেখাব।’’ কিন্তু তিনি ফের কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব নিতে তৈরি কি না, তা নিজের মুখে স্পষ্ট করলেন না। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবিরের বক্তব্য, চিন্তন শিবিরে রাহুলের কংগ্রেস সভাপতি পদে ফেরার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়ে গিয়েছে।

কী সেই প্রেক্ষাপট? দীর্ঘদিন ধরেই রাহুল কংগ্রেসের সংগঠনে তরুণ মুখ তুলে আনতে চাইছিলেন। ২০১৭-তে কংগ্রেসের সভাপতি হলেও তাঁর ইচ্ছে মতো দলের নেতারা চলেননি—এই ক্ষোভ থেকেই ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে সভাপতির পদ থেকে রাহুল সরে দাঁড়িয়েছিলেন। এ বার চিন্তন শিবিরে তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ীই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি থেকে নিচু তলা পর্যন্ত সব স্তরে ৫০ শতাংশ পদে ৫০ বছরের কমবয়সিদের তুলে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃদ্ধদের সিংহভাগকেই বিদায় নিতে হবে। কংগ্রেসের নেতৃত্বে কার্যত নতুন প্রজন্ম উঠে আসবে। ‘টিম সনিয়া’-র বদলে ‘টিম রাহুল’ তৈরি হবে। ফলে রাহুলের সভাপতি হয়ে নিজের মতো দল চালাতেও কোনও সমস্যা হবে না।

রাহুল আজ নিজে বলেছেন, “আমি বলছি না, কোনও বয়স্ক থাকবেন না। কিন্তু ব্লক, প্রদেশ কমিটি থেকে শীর্ষ নেতৃত্বে নবীন-প্রবীণের সংমিশ্রণ থাকা উচিত।”

আগামী অগস্ট-সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচন। তার পরে অক্টোবর থেকে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু হবে। রাহুল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতাদের ব্যাখ্যা, তিনি নিজে দেশ জুড়ে এই জনসংযোগ কর্মসূচিতে রাস্তায় নামবেন বলে রাহুল বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি ফের হাল ধরতে তৈরি।

উদয়পুরে এসে কংগ্রেসের দুই সবেধন নীলমণি মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ভূপেশ বঘেলের মতো অনেকেই রাহুলকে ফের সভাপতি পদে ফেরার অনুরোধ করেছেন। আবার তেমনই রাহুল অনিচ্ছুক হলে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে কংগ্রেস সভানেত্রী করার দাবিও উঠেছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণন শনিবার চিন্তন শিবিরে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনার সময়ে সনিয়া গান্ধীর সামনেই দাবি তোলেন, রাহুলকে তো দু’বছর ধরে রাজি করানোর চেষ্টা হচ্ছে। রাহুল অরাজি হলে প্রিয়ঙ্কাকে সভানেত্রী করা হোক। কারণ তিনিই দলের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ। কৃষ্ণনের এই মন্তব্যের সময়ে সনিয়ার সঙ্গে প্রিয়ঙ্কাও হাজির ছিলেন। তবে রাহুল ছিলেন না। সনিয়া-প্রিয়ঙ্কা কেউই প্রতিক্রিয়া জানাননি।

তবে প্রিয়ঙ্কা গম্ভীর হয়ে যান বলে সূত্রের খবর। রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক মল্লিকার্জুন খড়্গে অবশ্য কৃষ্ণনকে থামানোর চেষ্টা করে বলেন, ‘‘চিন্তন শিবিরে সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। তার ফয়সালা সাংগঠনিক নির্বাচনে হবে।’’

আজ চিন্তন শিবিরের শেষে রাহুল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের বলেছেন, “আমার দিক থেকে বলতে পারি, আমি আপনার পরিবারের সদস্য, আপনারা আমার পরিবার।” দলের প্রবীণ নেতারা অনেক সময় মনোবল হারিয়ে ফেললেও, ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই জানিয়ে রাহুল বলেন, “বিজেপি-আরএসএসের মতাদর্শের বিরুদ্ধে আমার সারা জীবনের লড়াই। আমি ভয় পাই না। আমার কিছু এসে যায় না। আমি কোনওদিন দুর্নীতি করিনি। এক পয়সাও নিইনি। সত্যি কথা বলতে তাই ভয় পাই না।”

রাহুল সভাপতি হলেও, কংগ্রেসের অনেকের মত, প্রিয়ঙ্কাকে আরও বড় দায়িত্ব দেওয়া উচিত। হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা দীপেন্দ্র হুডা চিন্তন শিবিরে বলেছেন, প্রিয়ঙ্কাকে শুধু উত্তরপ্রদেশের গণ্ডিতে বেঁধে না রেখে জাতীয় স্তরে দায়িত্ব দেওয়া হোক। বিহারের কংগ্রেস নেত্রী রঞ্জিতা রঞ্জনেরও মত, প্রিয়ঙ্কাকে একটি রাজ্যে আটকে রাখা উচিত নয়।

Congress Rahul Gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy