প্রতীকী ছবি।
টাকা উদ্ধারের পর থেকেই সন্দেহ ও জল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছিল ঝাড়খণ্ডের সরকার ফেলার সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রকে ঘিরেই। সোমবার সিআইডি সূত্রের দাবি, ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস এবং জেএমএম সরকারের পতন ঘটাতেই ওই রাজ্যের ধৃত তিন কংগ্রেস বিধায়ককে প্রাথমিক ভাবে কিছু টাকা দেওয়া হয়েছিল। তবে মোট কত টাকা লেনদেনের কথা ছিল, সেই বিষয়ে গোয়েন্দারা এখনও অন্ধকারে। পুলিশের একাংশের দাবি, জেরার মুখে ধৃতেরাই স্বীকার করেছেন, ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতায় থাকা দু’টি রাজনৈতিক দলের ১৩ জন বিধায়ককে ‘কিনে’ সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের ধৃত তিন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়িতে পাওয়া টাকা লালবাজারের কাছে একটি অফিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। বিধায়কদের সঙ্গে থাকা ঝাড়খণ্ডের যুব কংগ্রেস নেতা, ধৃত প্রতীক কুমার সেই টাকা সংগ্রহ করেছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। প্রতীকের সঙ্গে নাকি মধ্য কলকাতার হোটেলের এক কর্মীও ছিলেন।
পুলিশ জানায়, প্রতীককে টাকা দিয়েছিলেন কলকাতার এক ব্যবসায়ী। যিনি মূলত শেয়ার ট্রেডিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। সিআইডি-র সন্দেহ, ওই ব্যবসায়ী হাওয়ালার সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন। অসম থেকে সেই টাকা তাঁর কাছে এসেছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অসমের কোনও প্রভাবশালী নেতার নির্দেশেই তিনি ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ককে ওই টাকা দিয়েছিলেন। সোমবার বিকেলে ভবানী ভবন থেকে বেরোনোর সময় ধৃত কংগ্রেস বিধায়কদের অন্যতম ইরফান আনসারি অবশ্য দাবি করেন, ছেলের ভর্তির জন্য অসমে গিয়েছিলেন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
শনিবার বিকেলে হাওড়ার পাঁচলায় ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার বিধায়ক ইরফানের গাড়ি আটক করে পুলিশ। উদ্ধার হয় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। ওই গাড়িতে ছিলেন খিরজির বিধায়ক রাজেশ কাছাপ, কোলেবিরার বিধায়ক নমন বিক্সাল এবং প্রতীক। ওই চার জনকে গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে ধরা হয়েছে গাড়িচালককেও। গোয়েন্দারা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর এক আত্মীয় এবং মধ্য কলকাতার একটি হোটেলের কয়েক জন কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সোমবার।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, শুক্রবার তাঁরা বিমানে কলকাতায় এসেছিলেন। মধ্য কলকাতার হোটেলে উঠলেও সেখানে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেননি। তদন্তকারীদের দাবি, তাঁরা হোটেলের মালিকের পূর্বপরিচিত। এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, ২০ জুলাই প্রথম বার গুয়াহাটি যান রাজেশ ও ইফরান। সেখানে প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন। গত শুক্রবার তিন বিধায়ক আবার অসম যান। অভিযোগ, সেখানেই ঝাড়খণ্ডের ওই বিধায়কদের সঙ্গে ‘ডিল’ বা চুক্তি হয়। সিআইডি সূত্রের খবর, শনিবার ওই হোটেলে বিধায়কদের দল ঢোকার পরে প্রতীক একটি স্কুটি নিয়ে লালবাজার যান। একটি ব্যাগ নিয়ে ফিরে আসেন। গোয়েন্দাদের অনুমান, ওই ব্যাগেই টাকা আনা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy