Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Anti BJP Alliance

খাদের ধার থেকে ফিরে এল নতুন জোট ‘ইন্ডিয়া’-র অভ্যন্তরীণ ঐক্য, দ্বন্দ্ব মিটল কংগ্রেস-তৃণমূলে

Sonia Gandhi and Mamata Banerjee

(বাঁ দিকে) সনিয়া গান্ধী এবং (ডান দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ০৯:১৯
Share: Save:

খাদের ধার থেকে আবার সুরক্ষাবলয়ে ফিরে এল নতুন জোট ‘ইন্ডিয়া’-র অভ্যন্তরীণ ঐক্য। দিনের শেষে বিরোধী নেতাদের বক্তব্যের নির্যাস, সব ভাল যার শেষ ভাল। সেই সঙ্গে এটাও বলা হচ্ছে, কোথাও কোনও টোল নেই। ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগোচ্ছে ‘টিম ইন্ডিয়া’।

‘ইন্ডিয়া’-র বৈঠকের আগেই কংগ্রেস আজ নিজ দায়িত্বে গৌরব গগৈকে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করিয়ে স্পিকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয় তৃণমূলের সঙ্গে। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কংগ্রেস নেতৃত্ব এ কারণে ক্ষমাও চেয়েছেন বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি কেন কংগ্রেস এই কাজ করল তার ব্যাখ্যাও তারা দিয়েছে বৈঠকে।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে বিরোধীদের বৈঠকে এই প্রস্তাবে একমত হন সব বিরোধী দলই। তৃণমূলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, সুদীপ একমত হলেও ডেরেক বৈঠকে জানান, এ ব্যাপারে নিজেদের মত জানাতে তৃণমূলের কিছুটা সময় লাগবে। ফলে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। বৈঠকের শেষে কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, একমাত্র তৃণমূল বাদে সবাই লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার পক্ষে রয়েছে। তৃণমূল পরে তাদের মত জানাবে, তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবে। এর পর গোটা দিন ঘরোয়া ভাবে বিভিন্ন বিরোধী নেতাদের মধ্যে দৌত্য চলে। ডেরেকও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ঘরোয়া ভাবে জানান, এ ব্যাপারে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও আপত্তি নেই।

তবে তৃণমূল নেতৃত্বের ধারণা ছিল বুধবার সকালে বৈঠকে বসে বিষয়টিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলমোহর লাগানো হবে এবং নিয়ম অনুযায়ী (অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিতে হয় সকাল দশটার আগে) পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে তা জমা দেওয়া হবে সর্বসম্মতিক্রমে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী যখন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন যে বুধবারই অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ছে, তৃণমূল নেতৃত্ব তখনও এ ব্যাপারে আংশিক অন্ধকারেই।

আজ সকালে বিরোধীরা বৈঠকে বসার পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তৃণমূলকে জানানো হয়, আর অপেক্ষা না করে গৌরব গগৈকে দিয়ে তাঁরা সই করিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব স্পিকারের অফিসে জমা দিয়ে দিয়েছেন। কারণ দশটার বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করতে হলে আরও একদিন পিছিয়ে যেত প্রক্রিয়া। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুদীপ। সুদীপের বক্তব্য, তাঁরা জানতেও পারলেন না অথচ অনাস্থা প্রস্তাব চলে গেল স্পিকারের কাছে। কে সেই প্রস্তাবে সই করলেন, সেটাও তৃণমূল জানল পরে। সঙ্গে সঙ্গেই মৌখিক ভাবে ক্ষমা চায় কংগ্রেস। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ তাঁকে জানান, এই ঘটনার জন্য তাঁরা ক্ষমা চাইছেন এবং তাঁরা আন্তরিক দুঃখিত। তাঁর বক্তব্য, প্রথম দিনেই সবাই সহমত হয়ে গেলে এই ঘটনা ঘটত না। কিন্তু পরের দিনের বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করতে হলে আরও একদিন বিলম্ব হয়ে যেত। তা ছাড়া কংগ্রেসর যুক্তি, মঙ্গলবার বৈঠকের পর গোটা দিনের ঘরোয়া দৌত্যে এ ব্যাপারে সবার সায় রয়েছে সে কথা তাঁরা জেনেই নিয়েছিলেন। পাশাপাশি এর পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলির ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক সিলমোহরের জন্য অপেক্ষা করা হবে বলেই তৃণমূলকে জানায় কংগ্রেস।

পরে ডেরেক এবং তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সৌগত রায় সাংবাদিক সম্মেলনে অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। বরং ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ঐক্য বজায় রাখতে বারবার তাঁরা বলেছেন, সমন্বয় অত্যন্ত মসৃণ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE