Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
COVID 19

জেলায় কমছে সংক্রমণ, নেই অক্সিজেনের অভাবও, সঙ্কটকালে পথ দেখাচ্ছেন মহারাষ্ট্রের এই জেলাশাসক

করোনা সংক্রমণ এই মুহূর্তে সারা দেশের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। ভয় ধরাচ্ছে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলা অক্সিজেনের ঘাটতি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ১১:৪৮
Share: Save:
০১ ১৮
করোনা সংক্রমণ এই মুহূর্তে সারা দেশের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। ভয় ধরাচ্ছে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলা অক্সিজেনের ঘাটতি।

করোনা সংক্রমণ এই মুহূর্তে সারা দেশের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ। ভয় ধরাচ্ছে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলা অক্সিজেনের ঘাটতি।

০২ ১৮
প্রতি দিনই অক্সিজেনের অভাবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে রোগী মৃত্যুর খবর উঠে আসছে। প্রতি দিনই এ নিয়ে প্রশাসনকে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।

প্রতি দিনই অক্সিজেনের অভাবে দেশের নানা প্রান্ত থেকে রোগী মৃত্যুর খবর উঠে আসছে। প্রতি দিনই এ নিয়ে প্রশাসনকে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে।

০৩ ১৮
সারা দেশ যখন এই অবস্থায় চিন্তিত, তখন এতটুকু বিচলিত নয় মহারাষ্ট্রেরই একটি জেলা।

সারা দেশ যখন এই অবস্থায় চিন্তিত, তখন এতটুকু বিচলিত নয় মহারাষ্ট্রেরই একটি জেলা।

০৪ ১৮
সেখানে এক দিকে দ্বিতীয় ঢেউয়েও যেমন সংক্রমণের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে, তেমনই অক্সিজেনের বিন্দুমাত্র ঘাটতি দেখা দেয়নি। বরং আশেপাশের রাজ্য থেকেও চিকিৎসার জন্য এই জেলার উপরই ভরসা করছেন রোগীর পরিজনরা।

সেখানে এক দিকে দ্বিতীয় ঢেউয়েও যেমন সংক্রমণের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে, তেমনই অক্সিজেনের বিন্দুমাত্র ঘাটতি দেখা দেয়নি। বরং আশেপাশের রাজ্য থেকেও চিকিৎসার জন্য এই জেলার উপরই ভরসা করছেন রোগীর পরিজনরা।

০৫ ১৮
বিস্ময়ের বিষয় দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র অন্যতম। অথচ যে জেলার প্রশংসায় এতগুলি কথা খরচ করা হল সেটি মহারাষ্ট্রেরই একটি আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা।

বিস্ময়ের বিষয় দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র অন্যতম। অথচ যে জেলার প্রশংসায় এতগুলি কথা খরচ করা হল সেটি মহারাষ্ট্রেরই একটি আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা।

০৬ ১৮
ওই জেলার নাম নন্দুরবার। জনসংখ্যা ১৬ লাখ। দেশের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে হাসপাতালে বেড নেই, জীবনদায়ী ওষুধ অমিল, অক্সিজেনের হাহাকার, সেখানে এই জেলায় এখনও বেশ কিছু শয্যা খালি পড়ে রয়েছে।

ওই জেলার নাম নন্দুরবার। জনসংখ্যা ১৬ লাখ। দেশের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে হাসপাতালে বেড নেই, জীবনদায়ী ওষুধ অমিল, অক্সিজেনের হাহাকার, সেখানে এই জেলায় এখনও বেশ কিছু শয্যা খালি পড়ে রয়েছে।

০৭ ১৮
দুটো অক্সিজেন প্ল্যান্ট থেকে সমস্ত সঙ্কটাজনক রোগীকে অক্সিজেনও সরবরাহ করা হচ্ছে। গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ থেকেও রোগী এসে ভর্তি হচ্ছেন প্রত্যন্ত এই জেলার হাসপাতালে।

দুটো অক্সিজেন প্ল্যান্ট থেকে সমস্ত সঙ্কটাজনক রোগীকে অক্সিজেনও সরবরাহ করা হচ্ছে। গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ থেকেও রোগী এসে ভর্তি হচ্ছেন প্রত্যন্ত এই জেলার হাসপাতালে।

০৮ ১৮
রোজকার সংক্রমণ ১২০০ থেকে ৩০০-তে নেমে এসেছে এখানে। এর রূপকার নন্দুরবারের জেলাশাসক চিকিৎসক রাজেন্দ্র ভারুদ। চিকিৎসক, নার্স, স্বেচ্ছাসেবক, সরকারি বিভিন্ন কর্মী সকলকে সঙ্গে নিয়েই তিনি অতিমারির সঙ্গে লড়াইয়ের এই রূপরেখা তৈরি করেছেন।

রোজকার সংক্রমণ ১২০০ থেকে ৩০০-তে নেমে এসেছে এখানে। এর রূপকার নন্দুরবারের জেলাশাসক চিকিৎসক রাজেন্দ্র ভারুদ। চিকিৎসক, নার্স, স্বেচ্ছাসেবক, সরকারি বিভিন্ন কর্মী সকলকে সঙ্গে নিয়েই তিনি অতিমারির সঙ্গে লড়াইয়ের এই রূপরেখা তৈরি করেছেন।

০৯ ১৮
করোনার প্রথম ঢেউ সামলে যখন সারা দেশ প্রায় নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছিল, বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের মধ্যে গা ছাড়া ভাব দেখা দিয়েছিল, তখন এতটুকু সময় নষ্ট না করে দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি।

করোনার প্রথম ঢেউ সামলে যখন সারা দেশ প্রায় নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছিল, বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের মধ্যে গা ছাড়া ভাব দেখা দিয়েছিল, তখন এতটুকু সময় নষ্ট না করে দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি।

১০ ১৮
স্কুল এবং কমিউনিটি হলগুলিকে কোভিড ১৯ কেন্দ্রে পরিণত করেছেন তিনি। সংক্রামিত ব্যক্তিদের আলাদা করে রাখার জন্য ৭ হাজার শয্যার একটি আইসোলেশন কেন্দ্র বানিয়েছেন। এর মধ্যে আবার ১৩০০ শয্যায় আইসিইউ সুবিধা রয়েছে।

স্কুল এবং কমিউনিটি হলগুলিকে কোভিড ১৯ কেন্দ্রে পরিণত করেছেন তিনি। সংক্রামিত ব্যক্তিদের আলাদা করে রাখার জন্য ৭ হাজার শয্যার একটি আইসোলেশন কেন্দ্র বানিয়েছেন। এর মধ্যে আবার ১৩০০ শয্যায় আইসিইউ সুবিধা রয়েছে।

১১ ১৮
পাশাপাশি সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে যাতে দ্রুত হাসপাতালে রোগীদের পৌঁছে দেওয়া যায় তার জন্য ২৭টি অ্যাম্বুল্যান্স কিনে রেখেছেন তিনি। ২টি আলাদা অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে শুধুমাত্র করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য।

পাশাপাশি সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে যাতে দ্রুত হাসপাতালে রোগীদের পৌঁছে দেওয়া যায় তার জন্য ২৭টি অ্যাম্বুল্যান্স কিনে রেখেছেন তিনি। ২টি আলাদা অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে শুধুমাত্র করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য।

১২ ১৮
৫০ লাখ টাকা দিয়ে রেমডিসিভিসির ওষুধও মজুত করে রেখেছেন তিনি।

৫০ লাখ টাকা দিয়ে রেমডিসিভিসির ওষুধও মজুত করে রেখেছেন তিনি।

১৩ ১৮
আর এই মুহূর্তে সারা দেশের কাছে যা সবচেয়ে উদ্বেগের, সেই অক্সিজেনের অভাবে যাতে মানুষ না মারা যান তার জন্য ইতিমধ্যেই দুটো অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।

আর এই মুহূর্তে সারা দেশের কাছে যা সবচেয়ে উদ্বেগের, সেই অক্সিজেনের অভাবে যাতে মানুষ না মারা যান তার জন্য ইতিমধ্যেই দুটো অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।

১৪ ১৮
গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথম অক্সিজেন প্ল্যান্ট বানান তিনি। দ্বিতীয়টি বানিয়েছেন চলতি বছরের মার্চে। খুব তাড়াতাড়ি তৃতীয়টিও তৈরি হয়ে যাবে। প্রতিটি প্ল্যান্টের জন্য খরচ হয়েছে ৮৫ লাখ টাকা।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথম অক্সিজেন প্ল্যান্ট বানান তিনি। দ্বিতীয়টি বানিয়েছেন চলতি বছরের মার্চে। খুব তাড়াতাড়ি তৃতীয়টিও তৈরি হয়ে যাবে। প্রতিটি প্ল্যান্টের জন্য খরচ হয়েছে ৮৫ লাখ টাকা।

১৫ ১৮
তিনটি প্ল্যান্ট থেকে সম্বিলিত ভাবে প্রতি মিনিটে অন্তত ৩ হাজার লিটার অক্সিজেন তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সক্রিয় দু’টি প্ল্যান্ট থেকে সরাসরি অক্সিজেন পাইপের মাধ্যমের রোগীদের কাছে পৌঁছে যায়।

তিনটি প্ল্যান্ট থেকে সম্বিলিত ভাবে প্রতি মিনিটে অন্তত ৩ হাজার লিটার অক্সিজেন তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সক্রিয় দু’টি প্ল্যান্ট থেকে সরাসরি অক্সিজেন পাইপের মাধ্যমের রোগীদের কাছে পৌঁছে যায়।

১৬ ১৮
রোগীদের মধ্যে সামান্যতম শ্বাসকষ্ট দেখা দিলেই তাঁদের অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। শুরুতেই রোগীকে অক্সিজেন দিতে পারলে সম্মিলিত ভাবে রোগীদের মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদাও কিছুটা কমে। এমনটাই মনে করেন তিনি।

রোগীদের মধ্যে সামান্যতম শ্বাসকষ্ট দেখা দিলেই তাঁদের অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। শুরুতেই রোগীকে অক্সিজেন দিতে পারলে সম্মিলিত ভাবে রোগীদের মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদাও কিছুটা কমে। এমনটাই মনে করেন তিনি।

১৭ ১৮
এ ছাড়া ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের কাছে টিকা পৌঁছে দিতেও তিনি বদ্ধপরিকর। জেলার প্রত্যন্ত প্রান্তগুলিতে ১৬টি আলাদা গাড়িতে প্রতিষেধক পৌঁছে দিচ্ছেন ঘরে ঘরে।

এ ছাড়া ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকলের কাছে টিকা পৌঁছে দিতেও তিনি বদ্ধপরিকর। জেলার প্রত্যন্ত প্রান্তগুলিতে ১৬টি আলাদা গাড়িতে প্রতিষেধক পৌঁছে দিচ্ছেন ঘরে ঘরে।

১৮ ১৮
করোনার সময়ে সারা দেশকে পথ দেখিয়েই যে তিনি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন তাই নয়, আইএএস রাজেন্দ্রর নিজের জীবন কাহিনিও অনুপ্রেরণা জোগাবে। একা মায়ের সন্তান রাজেন্দ্র ছোট থেকেই অনেক অভাবের মধ্যেই বড় হয়েছেন। আইএএস হওয়ার আগে পর্যন্ত কুঁড়ে ঘরে কাটিয়েছেন তিনি। সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।

করোনার সময়ে সারা দেশকে পথ দেখিয়েই যে তিনি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন তাই নয়, আইএএস রাজেন্দ্রর নিজের জীবন কাহিনিও অনুপ্রেরণা জোগাবে। একা মায়ের সন্তান রাজেন্দ্র ছোট থেকেই অনেক অভাবের মধ্যেই বড় হয়েছেন। আইএএস হওয়ার আগে পর্যন্ত কুঁড়ে ঘরে কাটিয়েছেন তিনি। সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE