কেরলের মানুষ তাঁর দলকে একটাও আসন দেয়নি। তবে এই রাজ্য তাঁর কাছে নিজের কেন্দ্র বারাণসীর মতোই আপন বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ওয়েনাডের সাংসদ হিসেবে রাহুল গাঁধী যখন তিন দিনের কেরল সফর করছেন, তখনই আজ প্রধানমন্ত্রী পৌঁছেছিলেন বিখ্যাত গুরুবায়ুর মন্দিরে। সেখানে পুজো দেওয়ার পরে রাজ্য বিজেপির ‘অভিনন্দন সভা’-য় মোদী তাঁর সফরের কারণ ব্যাখ্যা করেন। বলেন, ‘‘অনেকেই অবাক হয়ে ভাবছেন, কেরলে একটাও আসন না জিতে মোদী কেন এ রাজ্যে ভাষণ দিতে এলেন! আসলে দেশের মানুষকে আমি আলাদা আলাদা চোখে দেখি না। আমার কাছে কেরলের মানুষ ততটাই আপন, যতটা বারাণসীর।’’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গণতন্ত্রে ভোট হবেই। আর এতে জয়ী হচ্ছেন যিনি, তাঁর দায়িত্ব ১৩০ কোটি দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে চলা। যাঁরা আমাদের জিতিয়েছেন, আর যাঁরা জেতাতে চাননি, সকলেই আমাদের নিজেদের লোক।’’ মোদীর দাবি, শুধু সরকার গড়তেই রাজনীতিতে আসেননি তিনি। বরং মানুষের জন্য কাজ করে যেতে এসেছেন। বলেন, ‘‘দেশের মানুষ পাঁচ বছরের জন্য ‘জনপ্রতিনিধি’ নির্বাচন করেন। কিন্তু আমরা ‘জন-সেবক’। সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’’
মোদী দাবি করেন, রাজনীতির পন্ডিতেরা লোকসভা ভোটে মানুষের মনের কথা বুঝতে পারেননি। তবে দেশ নেতিবাচক ভাবনাকে খারিজ করে ইতিবাচক দিকটিকেই গ্রহণ করেছে। ‘ভোটে মানুষই ভগবান’ মন্তব্য করেছেন তিনি। মোদী এ দিন ধন্যবাদ জানান কেরলের জনতাকে। বলেন, ‘‘এ রাজ্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছি। আমাদের দল এখানকার একটি আসনও জিততে পারেনি ঠিকই, তবে এ রাজ্যের জন্য সক্রিয় ভাবে কাজ করবে সরকার। কেরলের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করব।’’
সকাল দশটায় ত্রিশূর জেলার গুরুবায়ুর মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছতেই রীতি মেনে শুরু হয় ‘তুলাভরম’। দাঁড়িপাল্লায় এক দিকে মোদী। অন্য দিকে তোলা হয় পদ্মফুল। মোদীর ‘তুলাভরম’-এর জন্য তামিলনাড়ুর নাগেরকয়েল থেকে ১১১ কেজি পদ্মফুল আনা হয়েছিল। কেরলের ঐতিহ্যবাহী ‘কাসাভু মুন্ডু’ পোশাক পরে পুজো দেন মোদী। আধ ঘণ্টা কাটিয়ে ফেরেন শ্রীভালসাম গেস্ট হাউসে। গুরুবায়ুর মন্দির থেকে গেস্ট হাউসটির দূরত্ব বেশি নয়, আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছবেন, তার আগে তৈরি ছিল কনভয়। কিন্তু হেঁটেই মন্দিরে পৌঁছন মোদী।
দুপুরে ত্রিশূরে জনসভা ছিল মোদীর। দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পরে এটাই তাঁর প্রথম জনসভা। কেরলে রাহুল গাঁধী আজ একের পর এক রোড শো থেকে প্রধানমন্ত্রীকে যখন আক্রমণ করেছেন, তখন মোদীর মুখ থেকে উধাও প্রচারের ঝাঁঝালো ভাষা। বরং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার কথাই শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।