পুরশুড়ার রাস্তায় এক ‘তৃণমূল সমর্থকের’ সঙ্গে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘জয় বাংলা বনাম জয় শ্রীরাম’ ‘বচসা’ এ বার পৌঁছে গেল লোকসভায়। আজ লোকসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। অন্য দিকে কলকাতায় পুজোকমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছেন, ‘‘জয় বাংলা শুনে রেগে যাচ্ছেন কেন? কীসের জ্বালা?’’
শুভেন্দু অবশ্য বলেছেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে ঘিরে দাঁড় করিয়ে ওটা বলানো হয়েছিল ইচ্ছাকৃত ভাবে। ভারতীয় হলে ‘জয় হিন্দ’ বলবেন, ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলবেন। হিন্দু হলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে পারেন, মুসলিম হলে বলবেন না। কিন্তু বাংলাদেশের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলবে কেন?’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘মইদুল নামেএক ব্যক্তি ওটা করেছেন। এরা নিশ্চয়ই রোহিঙ্গা! এদের ধরে বার করেদেওয়া উচিত!’’
লোকসভায় জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে মহুয়া লিখেছেন, ‘একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক স্থানীয় বাসিন্দাকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান তোলার জন্য রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এ রাজ্যের সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত। আর বিরোধী দলনেতার এই আচরণ আসলে কণ্ঠরোধেরই একটা নজির। তার থেকেও আশঙ্কাজনক, শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষী বা কেন্দ্রীয় বাহিনীর আচরণ। তাঁরা গাড়ি থেকে নেমে রীতিমতো ওই ব্যক্তিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন।’ এর পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করে মহুয়া মৈত্র বলেন “এই কেন্দ্রীয় বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আওতাধীন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেমন মণিপুরের পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ, তেমনই দেশের সীমান্তকেও নিরাপদ রাখতে পারেননি। এ দিকে সাধারণ মানুষের প্রতি কেন্দ্রীয় বাহিনীর এমন আচরণেও কোনও পদক্ষেপ তিনি করেননি। তাই ওঁর এই পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত।”
অন্য দিকে লোকসভায় গত কাল বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খানের আচরণের বিরুদ্ধে আজ অধিবেশন কক্ষে স্বর তোলেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং তৃণমূলের অন্য মহিলা সাংসদেরা। মণিপুর নিয়ে আলোচনার সময় কাকলি যখন বলছিলেন, সৌমিত্র কার্যত তাঁর দিকে তেড়ে যান। বিষয়টি নিয়ে বিরোধী দলের মহিলা সাংসদেরা স্পিকারের ঘরে গিয়ে অভিযোগ করেন। সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সৌমিত্রকে ডেকে কথাও বলেন। আজ অবশ্য সৌমিত্র বলেন “গত কাল আমি যখন জ়িরো আওয়ারে বলছিলাম, সেই সময় আমাকে তৃণমূল বেঞ্চ থেকে প্রবল ভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল। সে কারণেই কাকলির বক্তব্যের সময় পাল্টা বাধা দিই।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)