লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাসের উদ্যোগ আগামী ৩০ বছরের জন্য মুলতুবি রাখার দাবি তুলেছে তামিলনাড়ু। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের নেতৃত্বে আগামী ২২ মার্চ সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে চেন্নাইয়ে। কিন্তু সেখানে যাওয়া নিয়ে কোনও সক্রিয়তা এখনও পর্যন্ত নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের। যদিও আসন পুনর্বিন্যাসে পশ্চিমবঙ্গের তিন থেকে চারটি আসন কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী কেন্দ্রের সীমা পুনর্বিন্যাসের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিরোধ গড়তে মমতা-সহ ৭ জন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন স্ট্যালিন। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের সীমা পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত করছে কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে সংসদের চলতি বাজেট অধিবেশনে ধারাবাহিক ভাবে সংসদের ভিতরে ও বাইরে প্রতিবাদ জানাচ্ছে ডিএমকে। সেখানে তৃণমূলকে কোনও ভাবেই দেখা যায়নি।
তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই, দেশের আরও চারটি রাজ্যে ভোট। এ ছাড়া এই বছরেই রয়েছে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। ফলে একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার কার্ডের বিষয়টি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আসন পুনর্বিন্যাস নিয়েও বিরোধিতায় সুর চড়ালে ভোটার কার্ডে কারচুপি ঘিরে আক্রমণের কৌশল লঘু হতে পারে। এই নিয়ে এখন ধাপে ধাপে নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ বাড়াচ্ছে তৃণমূল। আপাতত ২২ তারিখের স্ট্যালিনের ডাকা
বৈঠকে তৃণমূলের আদৌ কেউ যাবেন কি না, বা গেলে কে যাবেন তা এখনই স্থির করা হয়নি। সূত্রের খবর, ১৯ তারিখ হয়তো এই নিয়ে সিদ্ধান্ত
হতে পারে।
২০২৬-এ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ভোট। আর ওই বছরেই পরে যে জনগণনা হবে, তার ভিত্তিতেই লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হওয়ার কথা। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল, বর্তমান জনসংখ্যা অনুযায়ী লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়বে। স্ট্যালিনের অভিযোগ, লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি থেকে লোকসভায় সাংসদ কমবে। কারণ, দক্ষিণের রাজ্যগুলি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সাফল্য দেখিয়েছে। উল্টো দিকে, উত্তর ভারত বা হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলিতে আসন বাড়বে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)