বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়—এই স্লোগানে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যকে মুড়ে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ফলও হয়েছিল তাতে। বিশ্লেষকদের হিসাব, মহিলারা ঢেলে ভোট দিয়েছিলেনমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। চব্বিশের লোকসভা ভোটেরআগে মোদী সরকার মহিলাসংরক্ষণ বিল পাশ করিয়ে যাতে পশ্চিমবঙ্গে মমতার এই মহিলা ভোটব্যাঙ্কে যাতে ভাগ না বসাতে পারে সে জন্য সতর্ক তৃণমূল নেতৃত্ব। লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের পরের দিনই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে যাঁদের লড়াইয়ের টিকিট দেওয়া হবে, তাঁদের ৫০ শতাংশ মহিলা হবেন বলে ভাবছে দল।
অভিষেকের কথায়, “মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ কী ভাবে করতে হয়, আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই তা করে দেখিয়ে দিয়েছেন৷ আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ৫০ শতাংশ মহিলা প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে৷”
প্রসঙ্গত, সংসদের গত শীতকালীন অধিবেশনে এক লিখিত প্রশ্নে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কেন্দ্র এই বিলটি সংসদে পেশ করতে চায় কি না। রাজ্যসভা, লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় মহিলা সাংসদ ও বিধায়কের তালিকাও সে সময় চেয়েছিলেন তিনি।
অভিষেকের বক্তব্যের জবাবে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু তালিকা দেন। তাতে দেখানো হয়েছিল, মহিলা বিধায়কের সংখ্যায় পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে ছত্তীসগঢ়েরপরেই, অর্থাৎ দ্বিতীয় স্থানে (১৩.৭০ শতাংশ)। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় এই হিসাব যথাক্রমে ১৪.৯৪ এবং ১৪.০৫ শতাংশ।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলা নির্যাতনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাংলার ভোট প্রচারে বিজেপি-কে নিশানা করাহবে বলে কৌশল তৃণমূলের৷বুধবার মহিলা বিল নিয়ে আলোচনার সময় তৃণমূলের লোকসভারসাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার তাঁর বক্তৃতায় পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সদ্যসমাপ্ত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের জয়ীদের মধ্যে ৫৩.৬৬ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪২.৯৭ শতাংশ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজয়ীদের ৩৫.৬৬ শতাংশ মহিলা।
মণিপুরে অত্যাচারিত মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে এ দিন পথে নামে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। জেলায় জেলায় স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন সংগঠনের সদস্যেরা। কলকাতায় এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সংগঠনের সভাপতি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মহিলাদের জন্য বিজেপি সরকার কিছু করেনি। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথপ্রদর্শক।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)