Advertisement
E-Paper

TMC: আরও তিন রাজ্যে ‘খেলার’ বাঁশি

তৃণমূল কংগ্রেসের ‘সম্প্রসারণের’ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে রাজনৈতিক সূত্রে এমন চর্চা শুরু হয়েছে।

অগ্নি রায় ও প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১১

ফাইল ছবি

পূর্ব থেকে পশ্চিম ‘খেলা’ চলছেই। এ বার কি ‘খেলা হবে’ মধ্য থেকে দক্ষিণ ভারতেও? তৃণমূল কংগ্রেসের ‘সম্প্রসারণের’ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে রাজনৈতিক সূত্রে এমন চর্চা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তামিল মানিলা কংগ্রেসের সভাপতি জি কে ভাসিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে তামিল মানিলা কংগ্রেস সূত্রের খবর। জি কে মুপানরের পুত্র ভাসিনকে তৃণমূলের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, দু’টি দলের মধ্যে সংযোগ তৈরি করার। এক কথায় তৃণমূল চায়, তামিল মানিলা কংগ্রেস তাদের সঙ্গে মিশে যাক। বলা হয়েছে, মানিলা কংগ্রেসের বর্তমান নেতারাই লড়বেন। তাঁদের যাবতীয় সহযোগিতা করবে তৃণমূলের রাজ্য শাখা। সূত্রের খবর, আরও বলা হযেছে, দু’টি দলই ‘টিএমসি’ হিসাবে পরিচিত। ফলে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির সম্ভাবনা কম। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মুপানরের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ছিল মধুর। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রস্তাব নিয়ে ভাসিন কোনও কথা দেননি বলে তামিল মানিলা কংগ্রেস সূত্রের খবর।

রাজনৈতিক শিবিরের খবর, শুধু তামিলনাড়ুই নয়। ছত্তীসগঢ়েও দলের ‘সম্প্রসারণ’ ঘটাতে উদ্যোগী তৃণমূল। সেই রাজ্যে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতা ত্রিভুবনেশ্বর শরণ সিংহ দেও-র সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে যোগ দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে তেমন কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলেই সূত্রের দাবি।

সূত্রের খবর, ভোটমুখী রাজ্য মণিপুরে কংগ্রেসের প্রাক্তন এবং বর্তমান বিধায়কদের সঙ্গেও তৃণমূল যোগাযোগ শুরু করেছে। গোয়ার উদাহরণ দিয়ে বলা হচ্ছে, গোয়ার মতোই মণিপুরেও গত নির্বাচনে কংগ্রেস সবথেকে বেশি আসন জিতেও সরকার গড়তে পারেনি। এবারও কংগ্রেস নিজেদের অটুট রাখতে পারবে না। সেই বিজেপি-ই সরকার গড়বে। তৃণমূল নেতৃত্বের ঘোষিত অবস্থান, যে রাজ্যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে কোনও আঞ্চলিক দল অথবা কংগ্রেস সফল ভাবে বিরোধিতা করছে, সেখানে নাক গলানো হবে না বা সেই দলকে সহায়তা করা হবে। উত্তরপ্রদেশের কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সেখানে প্রয়োজনে এসপি-র পাশে দাঁড়াবে তাঁর দল। কিন্তু সেই সূত্র অনুযায়ী, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে-ই প্রধান বিজেপি-বিরোধী মুখ। তামিলনাড়ুতে অন্য ছোট আঞ্চলিক দলের সঙ্গে তৃণমূলের হাত মেলানোর অর্থ, বিজেপি-বিরোধী ভোটকে ভাগ করা। কংগ্রেসের নেতারা বারবার বলছেন, এই কৌশলে বিজেপি-র হাতই শক্তিশালী করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস মণিপুরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপিকে ফায়দা করে দেওয়ার অভিযোগ তুলছে।

ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসই বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে সেখানেও একই প্রশ্ন। বিজেপি-কে হঠিয়ে ২০১৮ সালে ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে বটে, কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে কংগ্রেসে চলছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কথা ছিল, আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন ভূপেশ বঘেল এবং বাকি সময় গদি ছেড়ে দেবেন ত্রিভুবনেশ্বর শরণ সিংহ দেও-কে। যিনি এখন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বঘেলের মেয়াদ ১ নভেম্বর শেষ হলেও তিনি থেকে গিয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনে লড়াইয়ের খরচ অনেকটাই তিনি কংগ্রেস হাইকমান্ডকে জুগিয়েছেন। অসমের পরে এখন তিনি উত্তরপ্রদেশের প্রচারের দায়িত্বে। তাঁকে সরিয়ে প্রাপ্য আদায় করতে ব্যর্থ সুরগুজা রাজপরিবারের সন্তান, প্রবীণ নেতা ত্রিভুবনেশ্বর। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, এই সুযোগ নিতেই তৃণমূল তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।

বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ করার অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল শিবিরের যুক্তি, একাধিক রাজ্যে কংগ্রেস জিতেও নিজের দল ধরে রাখতে পারছে না। বিধায়করা বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছেন। ২০১৮-তে ছত্তীসগঢ়-রাজস্থানের সঙ্গে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে। তৃণমূলের বক্তব্য, কংগ্রেস কবে দেশে শক্তি পুনরুদ্ধার করবে, তার অপেক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসে থাকবেন না। লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলই যে বিজেপি-র প্রধান বিরোধী মুখ, তা তুলে ধরাই এখন লক্ষ্য মমতার।

TMC indian politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy