পহেলগাঁওয়ে বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বহু পর্যটক। বরাতজোরে ঘটনার সময়ে অকুস্থল থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন তাঁরা। কেউ আইসক্রিম খাওয়ার জন্য একটু বিলম্ব করেছিলেন। কেউ আবার মাঝপথে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করে নিচ্ছিলেন।
কাশ্মীর থেকে বেঁচে ফেরা বেঙ্গালুরুর পর্যটকেরা এমনই বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। যেমন ১৭ জন পর্যটকের একটি দলে ছিলেন বেঙ্গালুরুর সুমনা ভাট। তাঁরা প্রত্যেকেই একই সংস্থার কর্মী। অফিসের কাজে সাফল্যের পর তাঁদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ২২ এপ্রিল বৈসরন উপত্যকায় থাকার কথা ছিল তাঁদের। ঘোড়ার পিঠে উঠেও গিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে আইসক্রিম খাওয়ার জন্য একটি দোকানে থামেন তাঁরা। এরই মধ্যে আচমকা ঘোড়ার সহিসেরা বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সুমনাদের ফিরে যেতে বলেন তাঁরা। ওই মহিলা জানান, সুমনাদের ফিরে যেতে বলেই সহিসেরা ঘোড়া নিয়ে উধাও হয়ে যান। মাঝপথে কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। বৈসনর উপত্যকায় কী ঘটে গিয়েছে, সে বিষয়ে তখনও সুমনারা কিছুই জানতেন না। শেষে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ভয় পেয়েই প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে হোটেলে ফিরে যান তাঁরা।
আরও পড়ুন:
সুমনাদের মতো বেঙ্গালুরুর আরও একদল পর্যটক অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন। তাঁদের অবশ্য এমন মাঝপথে ফেলে রেখে যাননি সহিসেরা। তবে তাঁরা চা খাওয়ার জন্য মাঝে একটি দোকানে কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়েছিলেন। বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা স্ট্যানলি জ্ঞানম পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। তাঁদের সঙ্গে আরও দুই পরিবার ছিল। যাঁদের মধ্যে অন্যতম মধুসূদন সোমসেট্টি, যিনি জঙ্গিদের গুলিতে মারা গিয়েছেন। ২২ এপ্রিল বৈসনর উপত্যকায় যাচ্ছিলেন তাঁরা। দুপুর ১টা ৫০মিনিট নাগাদ একটি খাবারের দোকানে মধ্যাহ্নভোজের জন্য থামেন তাঁরা। ম্যাগি, পরোটা এবং পোলাও খান সকলে। তার পরে মধুসূদন এবং তাঁর স্ত্রী এগিয়ে যান বৈসরন উপত্যকার দিকে। কিন্তু বাকিরা চা খাওয়ার জন্য একটু অপেক্ষা করে যান। এর মধ্যেই ২টো ২০মিনিট নাগাদ উপরে গুলি চলার শব্দ শুনতে পান স্ট্যানলিরা। ওই সময়েই সহিসেরা তাঁদের দিকে ছুটে আসেন এবং দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বলেন। স্ট্যাটলি জানান, সহিস এবং স্থানীয় দোকানদারেরা তাঁদের সেখান থেকে পালাতে সাহায্য করেন।