এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভেঙে পড়ার পরেই রক্ষণাবেক্ষণের প্রশ্নে তুরস্কের দিকে আঙুল উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু সেই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে তুরস্কের পাল্টা দাবি, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদের ছিল না। তুরস্কের ‘ডিরেক্টরেট অফ কমিউনিকেশন সেন্টার ফর কাউন্টার ডিস ইনফরমেশন’-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, যে বিমানটি ভেঙে পড়েছে, সেটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল না তাদের সংস্থা ‘টার্কিশ টেকনিক’।
শুক্রবার তুরস্কের ‘ডিরেক্টরেট অফ কমিউনিকেশন সেন্টার’ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমান রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল টার্কিশ টেকনিক, এই খবর অসত্য। ভারত এবং তুরস্কের সাম্প্রতিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে এই ধরনের ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি তুরস্কের। একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়া এবং টার্কিশ টেকনিক সংস্থার মধ্যে ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে যে চুক্তি হয়েছিল, সেই চুক্তির আওতায় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ছিল না। তাদের সঙ্গে শুধুমাত্র বি-৭৭৭ রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তি হয়েছিল বলে দাবি তুরস্কের। এখনও পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়ার কোনও বোয়িং ৭৮৭-৮-এর রক্ষণাবেক্ষণ করেনি তারা।
তবে এই ধরনের ভুয়ো তথ্যের উপর নজরদারি চালাবে তারা। তুরস্কের পাল্টা অভিযোগ, আন্তর্জাতিক স্তরে তুরস্কের সংস্থাকে কালিমালিপ্ত করার যে প্রয়াস চলছে, তার উপর নজরদারি জারি রাখবে তারা। পাশাপাশি, এই দুর্ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশও করেছে তুরস্কের ডিরেক্টরেট অফ কমিউনকেশন।
প্রসঙ্গত, ভারত-পাক সংঘাতের আবহে পাকিস্তানকে সমর্থন করে তুরস্ক। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের জবাবে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের পরে খোলাখুলি পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। অভিযোগ ওঠে, তাঁদেরই দেওয়া ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের জনবসতি এবং সামরিক পরিকাঠামোর উপর আঘাত হানার চেষ্টা করে পাক ফৌজ। এমনকি, সংঘাতের আবহেও বিমানবোঝাই অস্ত্র আঙ্কারা থেকে ইসলামাবাদে পৌঁছেছিল বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের কয়েকটি বিমানবন্দর পরিচালনা এবং পরিষেবা ক্ষেত্রে সেলেবি অ্যাভিয়েশনের অংশগ্রহণ এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
ভারতের ন’টি বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত ছিল সংস্থাটি। ‘সেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’-সহ সেলেবির আরও দু’টি সংস্থা ভারতের ন’টি বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংক্রান্ত কাজ করত। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে তুরস্কের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর থেকেই আতশকাচের নীচে ছিল সেলেবির কাজকর্ম। শেষপর্যন্ত ‘জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের’ কথা উল্লেখ করে সেলেবির ভারতীয় বিমানবন্দরগুলিকে কাজ করার ছাড়পত্র বাতিল করে ভারত সরকার।