Advertisement
১১ মে ২০২৪

জেহাদি রুখতে আলফার উদ্বেগ

একদা যাদের সক্রিয় সহযোগিতায় তাঁরা তাঁদের সশস্ত্র সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সেই বাংলাদেশি জঙ্গি-জিহাদি নিয়ে হঠাৎ করে আলফার দু’টি গোষ্ঠী স্পর্শকাতর হয়ে পড়ায় হতবাক রাজ্য প্রশাসন। অসমে জেহাদিদের ঘাঁটি তৈরি রুখতে অসমবাসীকে সতর্ক করে বার্তা দিয়েছে আলফার দু’টি গোষ্ঠীই। সংগ্রামপন্থীদের সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়ার বক্তব্য, “ধর্মের নামে অসমবাসীকে বিভক্ত করার চক্রান্ত চলছে।” আলোচনাপন্থী অংশের সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়ার কথায়, “রাজ্যের অনেক বড় বিপদ আসতে পারে। সাবধান হতে হবে।”

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০৮
Share: Save:

একদা যাদের সক্রিয় সহযোগিতায় তাঁরা তাঁদের সশস্ত্র সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সেই বাংলাদেশি জঙ্গি-জিহাদি নিয়ে হঠাৎ করে আলফার দু’টি গোষ্ঠী স্পর্শকাতর হয়ে পড়ায় হতবাক রাজ্য প্রশাসন। অসমে জেহাদিদের ঘাঁটি তৈরি রুখতে অসমবাসীকে সতর্ক করে বার্তা দিয়েছে আলফার দু’টি গোষ্ঠীই। সংগ্রামপন্থীদের সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়ার বক্তব্য, “ধর্মের নামে অসমবাসীকে বিভক্ত করার চক্রান্ত চলছে।” আলোচনাপন্থী অংশের সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়ার কথায়, “রাজ্যের অনেক বড় বিপদ আসতে পারে। সাবধান হতে হবে।”

এতে কিছুটা অবাক পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। গোয়েন্দাদের দাবি, সংগ্রামপন্থী আলফার নেতা পরেশ বরুয়া-সহ প্রায় শ’তিনেক সদস্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে অস্ত্র-প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ওই জঙ্গি সংগঠনের নেতা-সদস্যদের অনেককে একাধিক পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়েছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এমনকী এক সময় নিয়মিত পাকিস্তানে যাতায়াত ছিল পরেশের। সম্ভবত তখন তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল তৎকালীন আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনেরও।

পুলিশের দাবি, এ দেশে ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’ চালানোর কথা বলে আন্তর্জাতিক জিহাদ কাউন্সিল, তেহরিক উল-জিহাদ, হুজির সমর্থনও আদায় করার চেষ্টায় ছিলেন পরেশ। বাংলাদেশে জিহাদের ‘আখড়া’ হিসেবে চিহ্নিত কয়েকটি মাদ্রাসায় আলফার মাধ্যমেই আইএসআই টাকা পাঠাত। ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে আলফার বিপুল অস্ত্রভাণ্ডারের খোঁজ মেলে। তদন্তে জানা যায়, আইএসআই ও মৌলবাদী শক্তির সাহায্যেই ওই অস্ত্র মজুত করা হয়েছিল। সেই সময় ‘অবিভক্ত’ আলফার নেতৃত্ব দিতেন রাজখোয়া, পরেশ—দু’জনেই।

এখন তাদের দু’জনের রাস্তা পৃথক। রাজখোয়ারা শান্তি আলোচনা চালাচ্ছেন। পরেশ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক মুছে ফেলতে মরিয়া দু’জনই। অসমে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ৬ জন গ্রেফতার হওয়ার পরে তারা মৌলবাদের বিরুদ্ধে একসুর। কারণ এ ক্ষেত্রে সঙ্কটে যে অসম।

যদিও পরেশ দাবি করেছেন, “আলফা (স্বাধীন) কখনও মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে হাত মেলায়নি। মেলাবেও না। ভোট রাজনীতির স্বার্থে অসমে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বিভাজন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। অসমে অনুপ্রবেশ রুখতে সরকার ব্যবস্থা নেয়নি। সেই সুযোগ নিয়েছে জেহাদিরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE