Advertisement
২৩ মে ২০২৪
Uniform Civil Code

হিন্দু, মুসলিম কিংবা খ্রিস্টান বিভিন্ন ধর্মে বিবাহবিচ্ছেদেই নানা আইন, মেলানো হবে কী করে?

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে হলে বিভিন্ন ধর্ম-সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন বহু ফারাক মিটিয়ে ঐকমত্য তৈরি করতে হবে বলে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন।

Uniform Civil Code

—প্রতীকী ছবি।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ০৭:৩০
Share: Save:

হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, পার্সি—সকলের ক্ষেত্রেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হতে পারে। কিন্তু হিন্দু বিবাহ আইনে কোনও স্বামী তাঁর স্ত্রী-র বিরুদ্ধে শুধু বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলেই বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারেন। কিন্তু স্ত্রী-কে বিবাহবিচ্ছেদ পেতে হলে স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার সঙ্গে নিষ্ঠুর অত্যাচার বা পরিবারকে ত্যাগ করার অভিযোগও প্রমাণ করতে হবে।

খ্রিস্টানদের আইনে কোনও মহিলাকে বিবাহবিচ্ছেদ পেতে হলে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সঙ্গে নিষ্ঠুর অত্যাচারের অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। মুসলিমদের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ পেতে গেলে স্ত্রী-কে স্বামীর বিরুদ্ধে অন্য মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ আনলেই হবে না। ওই মহিলা দুশ্চরিত্র বলেও প্রমাণ করতে হবে। শিখদের পারিবারিক আইন আবার বিবাহবিচ্ছেদকে স্বীকৃতিই দেয় না। দত্তক নেওয়ারও প্রসঙ্গ নেই সেই আইনে।

পার্সি সম্প্রদায়ের কোনও মহিলা অন্য সম্প্রদায়ের কাউকে বিয়ে করলে তিনি আর পার্সি সম্প্রদায়ভুক্ত থাকেন না। তাঁর সন্তানও মায়ের পৈতৃক সম্পত্তিতে ভাগ পায় না। পার্সি বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ আইনে তেমনই বলা রয়েছে।

অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে হলে বিভিন্ন ধর্ম-সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন বহু ফারাক মিটিয়ে ঐকমত্য তৈরি করতে হবে বলে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, একই পরিবারের এক-এক ব্যক্তির জন্য আলাদা আইন হতে পারে না। তেমনই একই দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য বিভিন্ন আইন থাকতে পারে না। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার, দত্তক সংক্রান্ত আইনে বহু ফারাক রয়েছে। তা দূর করতে গেলেই নানা আপত্তি উঠতে পারে।

২২তম আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সকলের মতামত চেয়েছে। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার ক্ষেত্রে শুধু মুসলিম নয়, শিখদের আপত্তিও একটা বড় সমস্যা।’’ কী ভাবে? শিখদের বিবাহের নথিভুক্তি করাতে গেলে বা বিবাহবিচ্ছেদ করতে গেলে হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী চলতে হয়। তাতে শিখদের প্রবল আপত্তি রয়েছে।

বিবাহের বয়স নিয়েও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। পকসো আইন, শিশু বিবাহ নিষিদ্ধকরণ আইনে বলা রয়েছে, বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর হওয়া উচিত।

কিন্তু হিন্দু বিবাহ আইনে ১৮ বছরের কমবয়সি ছেলের সঙ্গে ১৬ বছর বয়সি মেয়ের বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ১৮ বছর বয়স হয়ে গেলে দু’জনেই বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uniform Civil Code Divorce Laws
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE