দেশের নজরে উন্নাও। ছবি: পিটিআই।
ডাকাবুকো বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেনগারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগটা প্রায় ১০ মাস আগের। কিন্তু এত দিনে ক্ষমতার ব্যূহ ডিঙিয়ে প্রায় বেরোতেই পারেনি অভিযোগকারী কিশোরীর পরিবার। উল্টে চাপ, হুমকি, এমনকী মারধরের শিকার হতে হয়েছে বলেও অভিযোগ। আতঙ্কে কাটাচ্ছিল গোটা পরিবার।
আশঙ্কা যে অমূলক নয় তা বোঝা যায় এ মাসের ৩ তারিখ। ‘ধর্ষিত’ কিশোরীর বাবাকে কুলদীপের লোকজন রাস্তায় ফেলে মারধর করে বলে অভিযোগ। তার পর উল্টে তাঁকেই তুলে দেওয়া হয়েছিল পুলিশের হাতে। চরম হতাশায় এবং ক্ষোভে মরিয়া হয়ে, গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ‘ধর্ষিতা’। এর পরেই সারা দেশের নজরে আসে এই ঘটনা।
পরিস্থিতি আরও বাঁক নেয় এর পরদিন, সোমবার। পুলিশ হেফাজতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় কিশোরীর বাবার। চাপ বাড়তে থাকে যোগীর উপর। অবশেষে ১০ মাস পর সিবিআই-কে তদন্তের ভার দেওয়া হল।
বিজেপি বিধায়ক বলেই কি যে কোনও উপায়ে কুলদীপকে আড়ালের চেষ্টা করেছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার? এই প্রশ্নগুলো এখন গোটা দেশে ঝড় তুলেছে।
আরও পড়ুন: উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে অবশেষে আটক বিজেপি বিধায়ক
আরও পড়ুন: বিচার পাবেই আসিফা, টুইট ভি কে সিংহের
সংক্ষেপে দেখে নেওয়া যাক উন্নাও-কাণ্ডের শুরু কী ভাবে, এবং কী ভাবে এগিয়েছে মামলা এবং ঘটনাবলী...
৪ জুন, ২০১৭: চাকরির আশায় উন্নাও এলাকায় বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেনগারের বাড়িতে গিয়েছিলেন কিশোরী। অভিযোগ, সেই সময় কুলদীপ এবং তাঁর ভাই অতুল দলবল নিয়ে তাঁকে গণধর্ষণ করেন।
১১ জুন ২০১৭: নিখোঁজ হয়ে যান কিশোরী। পরিবারের তরফ থেকে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
২০ জুন ২০১৭: আউরিয়া গ্রাম থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
২২ জুন ২০১৭: তোলা হয় আদালতে। কিশোরী জানান, কুলদীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিচ্ছে না পুলিশ।
৩ জুলাই ২০১৭: কিশোরীকে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। কুলদীপ এবং অতুলের বিরুদ্ধে যোগী আদিত্যনাথের কাছে অভিযোগ দায়েরের চেষ্টা। কিন্তু দেখা করার অনুমতি মেলেনি।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮: উন্নাওয়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে কিশোরীর মা।
৩ এপ্রিল ২০১৮: আদালতে মামলার শুনানি। আদালতে হাজির কিশোরীর বাবা। অভিযোগ, সেই দিন বিকেলেই কুলদীপ এবং তাঁর ভাই অতুলের হাতে তিনি আক্রান্ত হন। মারধরের পর কুলদীপ তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
৮ এপ্রিল ২০১৮: কুলদীপকে আড়ালের চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগে যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে পরিবারের লোকজন নিয়ে কিশোরীর বিক্ষোভ। গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা।
৯ এপ্রিল ২০১৮: পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই জেলা হাসপাতালে কিশোরীর বাবার ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু। অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ৬ পুলিশকর্মী সাসপেন্ড। গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে।
১০ এপ্রিল ২০১৮: ময়না তদন্তের রিপোর্টে মৃতের শরীরে ১৪টি আঘাতের উল্লেখ।
১১ এপ্রিল ২০১৮: সিবিআইয়ের হাতে তদন্তের ভার তুলে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদিত্যনাথের সরকার।
১২ এপ্রিল ২০১৮: তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে।
১৩ এপ্রিল ২০১৮: সিবিআইয়ের হাতে আটক কুলদীপ সিংহ সেনগার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy