Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Joe Biden

চিন-তাইওয়ান প্রসঙ্গে ভারতের ভূমিকা জানতে চায় আমেরিকা

তাইওয়ানের সঙ্গে সংঘাত বাধলে আমেরিকা এবং তার জোটের জন্য ভারতে একটি সহায়তা শিবির তৈরি করা যায় কি না তা ওই পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে।

joe biden

জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:২৯
Share: Save:

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নয়াদিল্লিতে আসার আগেই তাঁর প্রশাসন ভারতের কাছে জানতে চেয়েছিল, চিন তাইওয়ান আক্রমণ করলে দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রগণ্য দেশ হিসেবে ভারতের ভূমিকা কী হবে। শীর্ষ সূত্রের খবর, বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) অনিল চহ্বান। তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রে প্রকাশ। যদি এই অঞ্চলে যুদ্ধ বাধে এবং সেখানে আমেরিকা এবং তার জোট যুক্ত হয়ে পড়ে (তাইওয়ানের পক্ষে) তবে তার সার্বিক পরিণতি ও প্রভাব কী পড়তে পারে তা খতিয়ে দেখার জন্য এই পর্যালোচনা। ভারতের ভূমিকা কী হতে পারে সেটাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

যদি যুদ্ধ স্বল্পমেয়াদি হয়, তা হলে কড়া বিবৃতি দেওয়াই যথেষ্ট বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো দীর্ঘমেয়াদি হলে শুধু বিবৃতি দিয়ে গা বাঁচানো যাবে না। আমেরিকা-চিন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য নিঃসন্দেহে চাপের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রশ্নে নিজস্ব রাস্তা তৈরি করে চলছে বলেই দাবি করে থাকে সাউথ ব্লক। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সফল ভাবে ভারসাম্যের কূটনীতি অবলম্বন করে চলছে নয়াদিল্লি। এক দিকে আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা হচ্ছে এবং অন্য দিকে আমেরিকার কথামতো রাশিয়া সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাকে আমল দেওয়া হচ্ছে না।

তবে চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশই তিক্ত হচ্ছে ভারতের। জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে আসেননি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে বছরের পর বছর রয়েছে লাল ফৌজ, ভারতের টহলদারির এলাকায়। সম্প্রতি জাতীয় মানচিত্রে অরুণাচলকে অন্তর্ভুক্ত করেছে চিন। আর চিনকে চাপে ফেলতে ভারত ক্রমশই চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াডকে (ভারত-আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়া) আঁকড়ে ধরছে। জানুয়ারিতে ভারতে কোয়াড-এর শীর্ষ সম্মেলন বসার কথা। আমেরিকার সঙ্গে রণকৌশলগত সম্পর্কও আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে সাউথ ব্লকের।

সূত্রের খবর, তাইওয়ানের সঙ্গে সংঘাত বাধলে আমেরিকা এবং তার জোটের জন্য ভারতে একটি সহায়তা শিবির তৈরি করা যায় কি না তা ওই পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে। অর্থাৎ যুদ্ধবিমানের রক্ষণবেক্ষণ, সারানো, জ্বালানি, খাদ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম দেওয়া হবে সেখান থেকে। জি২০ শুরু হওয়ার আগের দিন ভারত-আমেরিকা যৌথ বিবৃতিতে আমেরিকার জাহাজ এবং বিমানের মেরামতের জন্য এ দেশে একটি কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা বলা হয়। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি দাবি করেন, “ওই মেরামত কেন্দ্রের নামে ভারতের মাটিতে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি তৈরি করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’

এই সমীক্ষা কবে শেষ করা হবে, তার কোনও তারিখ ঠিক করা না হলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হয়েছে, দ্রুত কাজ শেষ করতে। এর পর তা প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে দেওয়া হবে। প্রয়োজন পড়লে বা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা স্থির হবে রাজনৈতিক শীর্ষ স্তরে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরব হয়েছে বেজিং। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং সাংবাদিকদের বলেছেন, “তাইওয়ানকে সাহায্য করার নামে উত্তেজনা তৈরি করে আমেরিকা আন্তর্জাতিক সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করছে। সেটা খুবই বিপজ্জনক দিকে যেতে পারে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Joe Biden India China Taiwan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE