জাঠ ভোটকে ঘরে ফেরাতে ফের মেরুকরণকেই হাতিয়ার করলেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। আজ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচারের শেষে শাহ হিন্দু মেরুকরণের তাস খেলে সমাজবাদী পার্টির মুসলিম ও রাষ্ট্রীয় লোক দলের জাঠ ভোটের মধ্যে আড়াআড়ি বিভাজনের কৌশল নেন। ২০১৩ সালে সমাজবাদী পার্টির শাসনে হওয়া জাঠ ও মুসলমান সংঘর্ষের স্মৃতিকে উস্কে দিয়ে শাহ বলেন, একটি ভুল ভোট লখনউয়ের মসনদে সেই ‘দাঙ্গাকারীদের’ ফিরিয়ে আনতে পারে। শাহের পরে আগামী সোমবার জাঠ তথা কৃষক সমাজের মন জয়ে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমে প্রচার শুরু করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২০১৩ সালে মুজফ্ফরনগর দাঙ্গার পরে স্থানীয় জাঠ ও মুসলিমের মধ্যে যে বিভাজন হয়েছিল তার সুফল পর পর দুটি লোকসভা নির্বাচন ও পাঁচ বছর আগের বিধানসভা ভোটে ঘরে তুলেছে বিজেপি। ওই তিনটি ভোটেই হিন্দু ভোটের মেরুকরণের ফলে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে অনায়াসে জিতে এসেছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু এক বছর টানা কৃষক আন্দোলনের জেরে এ বার ছবিটি একেবারেই ভিন্ন। পেশায় মূলত কৃষক জাঠ সমাজের একটি বড় অংশ কৃষি আইনের বিরোধিকায় বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে ফের রাষ্ট্রীয় লোক দলের নেতা জয়ন্ত চৌধরির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। জাঠেদের সমর্থন জয়ন্তের পিছনে রয়েছে বুঝে এ বারের ভোটে আরএলডির সঙ্গে জোট করেছেন সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব। লক্ষ্য জাঠ-যাদব ও মুসলিম ভোট একজোট করে বিজেপিকে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ থেকে মুছে দেওয়া।
জাঠেরা পিছন থেকে সরে গেলে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে পরাজয় অবশ্যম্ভাবী বুঝে শেষবেলায় তাদের মন পেতে মাঠে নেমেছেন অমিত শাহেরা। আজ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে প্রথম দিন প্রচারে নেমেই উস্কে দিয়েছেন মুজফ্ফরনগরের দাঙ্গার স্মৃতি। সমাজবাদী পার্টির বাহুবলী আজম খানের উল্লেখ করে শাহ আজ বলেন, অখিলেশের সঙ্গে জয়ন্তের জোটের মেয়াদ ভোট গণনা পর্যন্ত। অখিলেশ যদি জিতে যায় তখন অখিলেশ ও জাঠেদের মাথার উপর ছড়ি ঘোরাবে আজম খানই। আজ অমিত শাহ নিজের বার্তায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, অখিলেশের শাসনে বিশেষ করে ২০১৩ সালে দাঙ্গার সময়ে যে ভাবে জাঠেরা এক ঘরে হয়ে পড়েছিলেন, এসপি ক্ষমতায় আগামী পাঁচ বছর সেই চিত্রের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। আজ নিজের প্রচারে ফের জয়ন্তের জন্য বিজেপির দরজা খোলা রয়েছে বলে প্রস্তাব ভাসিয়ে দিয়েছেন শাহ। যদিও তাঁর বিজেপিতে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন আরএলডি নেতা তথা চৌধরি চরণ সিংহের পুত্র জয়ন্ত। তিনি আজ বলেন, “আরএলডি প্রার্থীদের মুসলিম ভোট পাওয়া আটকাতে পরিকল্পিত ভাবে বিজেপিতে যোগদানের প্রস্তাব আমাকে দিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু আমি কি সিকি পয়সার মতো ওজনহীন? এতো সহজেই দিক পাল্টাব! আমার জোট পাল্টানোর কোনও প্রশ্ন নেই।”