একই কায়দায় ৯ জন মহিলাকে খুনের অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
১৩ মাসে ৯ জনকে খুনের অভিযোগ। শিকার কেবল মহিলারা। প্রত্যেকেরই বয়স ৪২ থেকে ৬০ বছরের মধ্যেই। প্রতিটিই খুনই প্রায় একই কায়দায়। কখনও শাড়ির আঁচল, কখনও চুড়িদারের ওড়না দিয়ে ফাঁস দেওয়া হয়েছে গলায়। এক বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর অবশেষে অভিযুক্ত ‘সিরিয়াল কিলার’ কুলদীপ কুমার গঙ্গওয়ারকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কুলদীপের খোঁজে চলছিল চিরুনিতল্লাশি। অভিযুক্তের সম্ভব্য গতিবিধির প্রসঙ্গে গত মাসেই খবর পান পুলিশকর্মীরা। কুলদীপের খোঁজে শুরু হয় ‘অপারেশন তলাশ’। সেই অভিযানেই বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মোট ন’জনকে খুন করেছেন অভিযুক্ত। প্রথম খুন হয়েছিল গত বছরের ২২ জুন। শেষ খুনটি হয়েছিল গত মাসের ২ তারিখ। পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে ছ’টি খুনের কথা জেরার মুখে স্বীকার করেছেন কুলদীপ। তবে বাকি তিনটি খুনের তদন্তেও পুলিশ যা যা তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে, তাতে কুলদীপের দিকেই সন্দেহ তদন্তকারীদের। প্রতিটি খুনই করা হয়েছে একই কায়দায়। শাড়ির আঁচল বা ওড়না দিয়ে যে ফাঁস দেওয়া হত, সেগুলির গিঁট দেওয়া হত গলার বাঁ দিকে।
খুনের পর মহিলাদের সঙ্গে থাকা কিছু একটি জিনিস নিয়ে নিতেন কুলদীপ। কখনও টিপ, কখনও লিপস্টিক, কখনও আবার পরিচয়পত্র। কুলদীপকে গ্রেফতার করার পর এমন বেশ কিছু সামগ্রী পুলিশ উদ্ধার করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশির ভাগ খুনগুলিই হয়েছে কোনও চাষের ক্ষেতে। কিংবা তার আশপাশে। পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাদের উপর ‘যৌন অভিপ্রায়’ নিয়ে হামলা চালাতেন অভিযুক্ত। বাধাপ্রাপ্ত হলে, শ্বাসরোধ করে খুন করে দিতেন বলে অভিযোগ। যদিও ন’জন মৃতার ময়নাতদন্তের সময় কারও দেহেই যৌন নির্যাতনের কোনও প্রমাণ মেলেনি।
তবে কী কারণে মহিলাদের খুন করতেন অভিযুক্ত, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, একের পর এক খুনের নেপথ্যে থাকতে পারে অভিযুক্তের ছোটবেলার কোনও মানসিক ক্ষত। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্ত কুলদীপের এক সৎমা ছিলেন। পরিবারে ঝামেলা-অশান্তি লেগে থাকত। পুলিশ সূত্রে খবর, শৈশবের এই ক্ষত অনুঘটকের কাজ করে থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। ধৃত অভিযুক্তের মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy