Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Gyanvapi Mosque

কোর্টের নির্দেশে সোমবার থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদে শুরু হল সমীক্ষার কাজ, জানাল জেলা প্রশাসন

বারাণসী জেলা আদালত এএসআই-কে জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা করার নির্দেশ দেয়। তবে বিতর্কিত ওজুখানায় পাওয়া তথাকথিত ‘শিবলিঙ্গ’ এবং সন্নিহিত এলাকায় এখনই কোনও সমীক্ষা হবে না বলে জানায় আদালত।

Varanasi’s Gyanvapi mosque survey begins on Monday, says district official

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
লখনউ শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩৮
Share: Save:

বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সোমবার থেকে বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই)। জেলা প্রশাসনের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। সোমবার ভোর থেকেই এই কাজ শুরু হয়েছে জানিয়েছেন বারাণসীর জেলাশাসক। সমীক্ষার কাজ চলার সময় মসজিদ চত্বরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য আঁটসাঁট করা হয়েছে নিরাপত্তা। রবিবারই এএসআই-এর একটি দল সমীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে বারাণসীতে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। এই মামলার সঙ্গে যুক্ত একটি অংশের তরফে জানা গিয়েছে, সমীক্ষা সংক্রান্ত বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছে জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটি। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

শুক্রবার বারাণসী জেলা আদালত এএসআই-কে জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে বিতর্কিত ওজুখানায় পাওয়া তথাকথিত ‘শিবলিঙ্গ’ এবং সন্নিহিত এলাকায় এখনই কোনও সমীক্ষা হবে না বলে জানিয়েছিল আদালত। আগামী ৪ অগস্টের মধ্যে সমীক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। পুরাতাত্ত্বিক পরীক্ষার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল চার হিন্দু মহিলা ভক্তের তরফে। অন্য দিকে, মসজিদ চত্বরে কোনও রকম সমীক্ষার বিরোধিতা করেছিল ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’। এ বিষয়ে দু’পক্ষের মতামত শোনার পরে গত ১৪ জুলাই রায় সংরক্ষিত রেখেছিলেন সিনিয়র বিচারক অজয় কুমার বিশ্বেস।

তথাকথিত ‘শিবলিঙ্গ’-এর বয়স নির্ধারণের জন্য হিন্দু পক্ষের তরফে পরীক্ষার আবেদন জানানো হলেও বারাণসী জেলা আদালত গত ১৪ অক্টোবর তা নাকচ করে দিয়েছিল। মসজিদ চত্বরের ওজুখানায় শিবলিঙ্গের উপস্থিতি দাবি করে তার বয়স জানার জন্য কার্বন ডেটিং পরীক্ষার যে আবেদন জানানো হয়েছিল, বিচারক বিশ্বেস তা খারিজ করে বলেছিলেন, ‘‘শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খোঁজার জন্য জ্ঞানবাপী চত্বরে কোনও রকম বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ করা যাবে না।’’ তাঁর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করা হয়েছে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।

এরই মধ্যে গত মে মাসে হিন্দু মহিলা ভক্তদের তরফে ‘সিল’ করা ওজুখানা এলাকার বাইরে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার’ আবেদন জানানো হয়েছিল। আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সেই দাবি মেনে নেন বিচারক বিশ্বেস। এই মামলায় নিযুক্ত উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিশেষ কৌঁসুলি রাজেশ মিশ্র শুক্রবার বলেছিলেন, ‘‘কোনও হিন্দু মন্দিরের জায়গায় মসজিদ গড়া হয়েছে কি না, তা সমীক্ষা করে দেখবেন আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার বিশেষজ্ঞেরা।’’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে মসজিদের অন্দরের ভিডিয়ো সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর। এর পরেই হিন্দু পক্ষের তরফে প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর।

সেই সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির কাজ শেষ হওয়ার পরে ২০২২ সালের ২০ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পায় বারাণসী জেলা আদালত। পর্যবেক্ষক দলের ভিডিয়োগ্রাফির রিপোর্টে মসজিদের ওজুখানার জলাধারে শিবলিঙ্গের মতো আকৃতির যে কাঠামোর খোঁজ মিলেছে, সেটি আসলে ফোয়ারা বলে মুসলিম পক্ষ দাবি করে। অন্য দিকে, হিন্দুপক্ষের তরফে প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল। ‘শিবলিঙ্গ’-এর বয়স নির্ধারণে কার্বন ডেটিং পদ্ধতির প্রয়োগ নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মধ্যে। তাঁরা জানাচ্ছেন, মৃত প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহাংশ এবং জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণে কার্যকরী হলেও এই পদ্ধতিতে কোনও প্রাচীন শিলা বা প্রস্তরখণ্ডের বয়স নির্ধারণ করা কঠিন (যদি তার গায়ে প্রাচীন জৈব দেহাবশেষ থাকে)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gyanvapi Mosque ASI varanasi Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE