গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবেই। অন্যের মত খণ্ডন করার অধিকার, বলার অধিকারও রয়েছে। কিন্তু সংবিধান এবং রাজ্যসভার রুলবুক সংসদীয় প্রক্রিয়ার ‘লক্ষ্মণরেখা’ ধার্য করে। সেই ‘লক্ষ্মণরেখা’ যেন সাংসদরা পেরিয়ে না যান! আজ উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান পদে বসার পর রাজ্যসভার সংসদীয় দলের নেতাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে এ কথা জানালেন সি পি রাধাকৃষ্ণণ।
অন্য দিকে দল নির্বিশেষে সংসদীয় নেতারা উপরাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছেন, প্রশ্নোত্তর পর্ব, স্বল্পমেয়াদি আলোচনা, জ়িরো আওয়ার, বিশেষ উল্লেখের মতো সংসদীয় সুযোগগুলিকে আরও বেশি করে কাজে লাগানো হোক। এ কথাও বিরোধী সাংসদরা বলেন যে, সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত বিষয় নিয়ে কোনও উদাহরণ দেওয়া হলে তাকে যেন তাকে প্রমাণ দেওয়ার খোপে আটকে না ফেলা হয়।
সংসদের অ্যানেক্স ভবনে বিকেলের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ২৯ জন সংসদীয় নেতা। তৃণমূলের পক্ষ থেকে ছিলেন রাজ্যসভায় দলীয় উপনেতা সাগরিকা ঘোষ। তিনি বৈঠকে বলেন, প্রতি সপ্তাহে একটি স্বল্পমেয়াদি আলোচনা, এক সপ্তাহ অন্তর দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব আনার সুযোগ দিতে হবে। গত আট বছরে মুলতুবি প্রস্তাবে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিরোধীদের জন্য এই ধারায় বছরে অন্তত একটি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হোক। আরও বেশি করে বিল যেন সংসদীয় কমিটির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়, তারও আর্জি জানিয়েছেন সাগরিকা। সংসদীয় টিভি বিরোধীদের প্রতিবাদকে নিয়মিত ভাবে বয়কট করছে। এই অবস্থার পরিবর্তনের দাবিও জানান তৃণমূলের সাংসদ। তিনি উপরাষ্ট্রপতি এবং তাঁর স্ত্রীকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, বিরোধী দলগুলি আজ দাবি তুলেছে তাদের বিষয়গুলি নিয়ে বলার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য। সংসদে কী বিল আনা হচ্ছে, তা অন্তত দু’দিন আগে সাংসদদের কাছে পাঠানোর দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জয়রাম রমেশ এবং প্রমোদ তিওয়ারি। রাধাকৃষ্ণণ কিছুটা লঘু স্বরেই বলেন, প্রত্যেক সাংসদই তাঁর প্রথম বক্তৃতার জন্য নির্বিঘ্ন সময় পান। এ বারের শীতকালীন অধিবেশন যেহেতু তাঁর প্রথম অধিবেশন হতে চলেছে, ফলে অনুরোধ— কেউ যেন তাতে ব্যাঘাত না করেন! তাঁর প্রাথমিক বক্তৃতায় রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেন, রাজ্যসভা তার গরিমা, শৃঙ্খলা এবং নিয়মকে মেনে চলবে এটাই কাঙ্ক্ষিত। প্রসঙ্গত বিহারের নির্বাচনী পর্ব মিটবে ১৬ নভেম্বর। তার ঠিক পরই শুরু হবে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)