Advertisement
E-Paper

মন্দিরে ভাঙচুর-তাণ্ডব, শ্রীক্ষেত্র অশান্তিপুরী

ফের অশান্ত পুরী! এ বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমাফিক মন্দিরে ভক্তদের দর্শনের বন্দোবস্তে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা জেরে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল শ্রীমন্দির চত্বর। বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদুয়ারের পাশেই মন্দির প্রশাসনের অফিস-সহ মন্দির লাগোয়া কয়েকটি ভবনে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পর্যন্ত উঠতে দেখা গিয়েছে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৪
জগন্নাথ মন্দির।

জগন্নাথ মন্দির।

ফের অশান্ত পুরী! এ বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমাফিক মন্দিরে ভক্তদের দর্শনের বন্দোবস্তে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা জেরে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল শ্রীমন্দির চত্বর। বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদুয়ারের পাশেই মন্দির প্রশাসনের অফিস-সহ মন্দির লাগোয়া কয়েকটি ভবনে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পর্যন্ত উঠতে দেখা গিয়েছে।

আসল লক্ষটা ছিল মন্দিরের ‘পান্ডারাজ’ বন্ধ করা। পুরীর মন্দির ঘোরানোর নাম করে সেবায়েতরা যাতে ভক্তদের বোকা বানিয়ে টাকাপয়সা পকেটে ভরতে না-পারে, ভক্ত ও উটকো সেবায়েতের মেলামেশা যত দূর সম্ভব কমাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। সর্বোচ্চ আদালতও বলেছিল, তিরুপতির মতো দক্ষিণ ভারতের মন্দিরগুলির ঢঙে পুরীতেও মন্দিরের কর্মকাণ্ড সামলানো যায় কি দেখতে। সেই মতো গত সোমবার থেকে ভক্তদের সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধ ভাবে দর্শনের জন্য ঢোকা ও বেরোনো চালু করা যায় কি না দেখার চেষ্টা করছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ! তাতেই আগুনে ঘি পড়েছে। নয়া ব্যবস্থায় পুরীর বাসিন্দা সাধারণ ভক্তদের সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করে এ দিন ১২ ঘণ্টার পুরী বন্‌ধের ডাক দিয়েছিল শ্রী জগন্নাথ সেনা। ওড়িশায় বিরোধী দল বিজেপি ও কংগ্রেসও নেমে পড়েছে। উত্তপ্ত আবহে মন্দির-চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করেও এ দিন মন্দিরে ভাঙচুর ঠেকানো যায়নি। কেন এমন হল খতিয়ে দেখতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে মন্দিরের মুখ্য প্রশাসক তথা আইএএস-কর্তা প্রদীপকুমার মহাপাত্র, পুরীর এসপি-সহ প্রশাসনের কর্তারা এ দিন সন্ধ্যায় বৈঠকে বসেন।

এমনিতে সেবায়েতদের বড় অংশই প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কিছুটা অখুশি। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ তথা মন্দিরের গুরুত্বপূর্ণ সেবায়েত দয়িতাপতিদের সংগঠনের কর্তা রাজেশ দয়িতাপতি, কিংবা বর্ষীয়ান দয়িতাপতি তথা সরকার নিযুক্ত মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রামচন্দ্র দয়িতাপতিও মনে করেন, তিরুপতির আদলে লাইন দিয়ে দর্শন ব্যবস্থা জগন্নাথ মন্দিরে কার্যকর হলে সমস্যা আছে। রাজেশ দয়িতাপতি বলেন, ‘‘প্রভু জগন্নাথের মতো ঘণ্টায় ঘণ্টায় ভোগ অন্য মন্দিরে হয় না। এখানে শুধু একটা দিকে লাইন দিয়ে দর্শন করালে বহু ভক্তই বিশেষ সময়ে মন্দিরে থাকতে পারবেন না।’’ সেবায়েতদের একাংশ বলছে, নতুন ব্যবস্থায় দূর থেকে আসা পর্যটকেদের সমস্যা না-হলেও পুরীর বাসিন্দারা সমস্যায় পড়ছেন। মন্দির লাগোয়া পাড়ার বাসিন্দা ভক্তেরা যে কোনও দরজা দিয়ে যখন খুশি মন্দিরে ঢোকেন, ইচ্ছেমতো সকালের মঙ্গল-আরতি বা শয়নের প্রভুর শৃঙ্গার বা বেশভূষা ধারণের সাক্ষী হন। সবাইকে লাইন দিয়ে ঢুকতে হলে তাঁরা অনেকে গর্ভগৃহের কাছাকাছি পৌঁছতেই পারবেন না। জনৈক সেবায়েতের বক্তব্য, সবাইকে লাইন মেনে চলতে হলে জগন্নাথ দর্শনের পরে ইচ্ছেমতো মহালক্ষ্মী বা বিমলা মায়ের দর্শনের অভিলাষও হয়তো পূরণ হবে না। ক্ষুব্ধ জনতা এ দিন পুরীর বিজেডি বিধায়ক মহেশ্বর মোহান্তির বাড়িতেও ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। রাতে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, স্থানীয় ভক্তরা পরিচয়পত্র-সহ যে কোনও দরজা দিয়ে মন্দিরে ঢুকতে পারবেন।

রত্নভাণ্ডারের চাবি হারানোর অভিযোগে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চলবে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত। তার আগেই ভক্তদের দর্শনের পদ্ধতি নিয়ে এমন বিভ্রাটে বিপাকে পড়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ তথা ওড়িশা সরকার।

Puri Violence Jagannath Temple জগন্নাথ মন্দির
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy