Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Viral

এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট সেজে সাত মহিলাকে বিয়ে, অন্য ছয় মহিলার শ্লীলতাহানি

এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করার খোঁজ মিলেছে রাজেশের বিরুদ্ধে। টেলিমার্কেটিংয়ের অফিসে যে ২২ জন মহিলা কাজ করতেন, রাজেশ তাঁদের মধ্যে অন্তত সাত জনকে বিয়ে ও অন্য ছয় মহিলার শ্লীলতাহানি করেছিলেন রাজেশ।

গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০:৫৭
Share: Save:

ক্লাস সেভেনের স্কুল পালানো এক ব্যক্তির কীর্তি চমকে দিল চেন্নাই পুলিশকে। ওই ব্যক্তি এ পর্যন্ত সাত জন মহিলাকে বিয়ে করেছেন এবং অন্য ছয় মহিলার শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ। আর এই সব করেছেন প্রাক্তন পুলিশের ভেক ধরে। রাজেশ পৃথ্বী নামে এই অভিযুক্ত নিজেকে চেন্নাই পুলিশের প্রাক্তন এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট বলে পরিচয় দিতেন। পুলিশের চাকরির পর খোলেন টেলিমার্কেটিং কোম্পানি। তার আড়ালেই চলত কুকীর্তি।

দু’বছর ধরে সবই চলছিল ‘ঠিক ঠাক’। রাজেশ পৃথ্বী (৪২) নামে এই অভিযুক্ত সবাইকে বলে বেড়াতেন যে তিনি চেন্নাই পুলিশের এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট ছিলেন। বছর দুই আগে একটি এনকাউন্টারে যান। সেখানে দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে গুলি করে মারেন। আর তারপরেই নাকি তাঁকে চাপের মুখে পুলিশের উর্দি ছাড়তে হয়। তাই ২০১৭ সালে একটি টেলিমার্কেটিং কোম্পানি খোলেন চেন্নাইয়ের নেলসন মানিক্যাম রোডে।

টেলি মার্কেটিংয়ের আড়ালে চলত মেডিক্যালে অ্যাডমিশন পাইয়ে দেওয়ার নামে লোকের কাছ থেকে টাকা তুলতেন রাজেশ। পুলিশ জানিয়েছে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা জালিয়াতি করার খোঁজ মিলেছে। টেলিমার্কেটিংয়ের অফিসে ২২ জন মহিলা কাজ করতেন। রাজেশ তাঁদের মধ্যে অন্তত সাত জনকে বিয়ে করেছিলেন। শুধু তাই নয় এই সাত জন ছাড়াও অন্য ছ’জনের শ্লীলতাহানি করেছেন। রাজেশ ওই সব টাকা স্ত্রীদের জন্য খরচ করতেন।

আরও পড়ুন : মোটর ভেহিকল আইনে এবার গরুর গাড়িকে ধরানো হল জরিমানার রসিদ

এ পর্যন্ত সব কিছু মোটের উপর নির্বিঘ্নেই চলছিল। কাল হল বছর আঠেরোর এক কিশোরীকে বিয়ে করতে গিয়ে। ওই কিশোরীর পরিবার চেন্নাইয়ের এগমোর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন, তাঁদের মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিশোরী, রাজেশের টেলিমার্কেটিং কোম্পানিতে কাজ করতেন।

আরও পড়ুন : সিটবেল্ট নেই, তাও অটো চালককে বেল্ট না পরার জন্য জরিমানা

তদন্তে নামে পুলিশ। ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ তিরুপুরার নোচিপালায়াম থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। কিশোরী জানান, রাজেশ তাঁকে বিয়ে করেছেন। উদ্ধার হওয়ার পর কিশোরী তাঁর বাবা মায়ের কাছেই ছিলেন। কিন্তু রাজেশ সেখানে গিয়ে কিশোরীকে তুলে নিয়ে আসতে যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রেফতার করে রাজেশকে।

আরও পড়ুন : তাসের ঘরের মতো কয়েক সেকেন্ডে ভেঙে পড়ল আস্ত পাকা বাড়ি

গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে চেন্নাই পুলিশ। এবার কাহিনীর একের পর রহস্য উদঘাটন হতে থাকে। জানা যায় রাজেশ পৃথ্বী নামে এই ব্যক্তির আসল নাম দীনেশ। এর আগে নেল্লোরে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। জামিন পাওয়ার পর উধাও হয়ে যান। নাম ভাঁড়িয়ে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান, ড্রাইভিং লাইসেন্স জোগাড় করে ফেলেন দীনেশ ওরফে রাজেশ। শুধু তাই নয় তাঁর কাছ থেকে সাব-ইন্সপেক্টরের ইউনিফর্ম, পুলিশের জাল পরিচয়পত্র, দুটি হতকড়া মিলেছে। শুধু রাজেশ নামই নয় বিভিন্ন জায়গায় কখনও শ্রী রাম গুরু দীনা, দয়ালন, দীন দয়ালন বা রাজেশ পেরুমল নাম ভাঁড়িয়ে কুকীর্তি চালাতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ত্রিচি, কোয়মবত্তূর, তিরুপতি ও কালাহস্তিতে অভিযোগ দায়ের রয়েছে।

পুলিশ দীনেশকে গ্রেফতার করে আদালতে তুললে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। খুঁজে দেখা হচ্ছে আর কী কী কীর্তি করে রেখেছেন দীনেশ। পুলিশ মনে করছে, দীনেশ গ্রেফতার হওয়ার পর আরও অভিযোগ সামনে আসবে, আরও তথ্য পাওয়া যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE