Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পাক-নীতি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই শরিক

মেহবুবা যখন আলোচনার উপরে জোর দিচ্ছেন, তখন বিজেপির জম্মু-কাশ্মীর শাখার মুখপাত্র সুনীল শেট্টি জানিয়েছেন, ‘‘পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করার পরে যদি আলোচনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে কেন্দ্র অবশ্যই ভেবে দেখবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, এ নিয়ে অন্য কারও মাথা ঘামানো নিষ্প্রয়োজন।

সংবাদ স‌ংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৬
Share: Save:

পাকিস্তান নীতি নিয়ে দুই শরিক বিজেপি ও পিডিপি-র মতপার্থক্য ফের প্রকাশ্যে।

সীমান্তে পাক সেনার গোলাবাজি ও রাজ্যের ভিতরে জঙ্গি হামলা এক যোগে চালু রয়েছে। যার ফলে গত এক বছরে নাশকতার শিকার হয়েছেন অন্তত পঞ্চাশের বেশি সাধারণ নাগরিক। সদ্য হয়ে গিয়েছে সুঞ্জওয়ানের সেনা ঘাঁটিতে হামলা। অভিযোগের আঙুল সেই পাকিস্তানের দিকেই। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে দেশবিরোধী বলা হবে জেনেও, শান্তির জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি সওয়াল করেছেন। কিন্তু সেই দাবি খারিজ করে আজ বিজেপি জানিয়ে দিয়েছে, ভারত-পাক আলোচনা হবে কি না তা ঠিক করবে কেন্দ্র। এতে ‘তৃতীয় পক্ষে’র হস্তক্ষেপ আদৌ কাম্য নয়। শান্তির বার্তা উড়িয়ে আজ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে কাশ্মীরে যে পরিমাণ জঙ্গি নিধন হয়েছে তা আগে হয়নি।’’ বার্তা স্পষ্ট, কাশ্মীরে দমননীতির পথ থেকে আপাতত সরে আসার কোনও ইচ্ছে নেই মোদী-অমিত শাহদের।

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে গত কাল সক্রিয় হতে দেখা যায় মেহবুবাকে। জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘যদি ফারুক আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলার কথা বলেন, তাহলে তাঁদের দেশবিরোধী বলে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু এই রক্তস্নান বন্ধ করতে হলে আলোচনা ছাড়া অন্য রাস্তা নেই। কারণ যুদ্ধ কোনও বিকল্প হতে পারে না।’’ মেহবুবা যখন আলোচনার উপরে জোর দিচ্ছেন, তখন বিজেপির জম্মু-কাশ্মীর শাখার মুখপাত্র সুনীল শেট্টি জানিয়েছেন, ‘‘পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করার পরে যদি আলোচনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে কেন্দ্র অবশ্যই ভেবে দেখবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ, এ নিয়ে অন্য কারও মাথা ঘামানো নিষ্প্রয়োজন।

এই মতপার্থক্যকে কাজে লাগিয়ে শরিক দুই দলের বিভেদকে উস্কে দিতে চেয়েছেন রাহুল গাঁধী। তিনি বলেন, ‘‘পিডিপি বলছে আলোচনার কথা। আর প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলছেন পাকিস্তান এর ফল বুঝবে। পিডিপি-বিজেপির সুবিধেবাদী জোটের কারণে সেনাদের রক্ত ঝরছে। আসলে নরেন্দ্র মোদী কেঁপে গিয়েছেন।’’

জবাব এসেছে সীমান্তের ওপার থেকেও। সুঞ্জওয়ানে হামলার প্রেক্ষিতে গত কাল জম্মুতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, ওই হামলার পিছনে রয়েছে পাকিস্তান। প্রতিবেশী দেশকে এর ফল ভুগতে হবে। আজ পাল্টা সুর চড়িয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খুররম দস্তগীর বলেছেন, ‘‘ভারত যদি দুঃসাহস দেখাতে যায় তাহলে তাদের ভাষাতেই জবাব দেওয়া হবে।’’ পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, ‘‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষ চাপানো ভারতের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা দুঃখজনক।’’ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে আমেরিকাও। শীর্ষ মার্কিন গোয়েন্দা কর্তা ড্যান কোটস আজ বলেছেন, ‘‘পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা ভারত ও আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েই যাবে। এর ফলে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

এরই মধ্যে সুঞ্জওয়ানে হামলাকারী জঙ্গিরা কোথাকার তা নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, জইশ-ই-মহম্মদের ওই জঙ্গিরা পাকিস্তানি। যাদের সাহায্য করেছিল স্থানীয় জঙ্গিরা। অন্য দিকে রাজ্যের গোয়েন্দাদের মতে, জঙ্গিরা স্থানীয়। কাশ্মীরের ত্রালের বাসিন্দা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE