Advertisement
E-Paper

তিন তালাক প্রথা মানি না, আদালতেই বলল মেয়েরা

হতে পারে তিন তালাক পাপ কাজ। কিন্তু মুসলিম মহিলারা এই প্রথা মেনে নিচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই যুক্তি দিয়েছিলেন মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের আইনজীবী কপিল সিব্বল।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:৪৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

হতে পারে তিন তালাক পাপ কাজ। কিন্তু মুসলিম মহিলারা এই প্রথা মেনে নিচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই যুক্তি দিয়েছিলেন মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের আইনজীবী কপিল সিব্বল।

এজলাস জুড়ে সমস্বরে মহিলাকণ্ঠে আওয়াজ উঠল, ‘‘নো-ও-ও-ও-ও।’’

শেষ হলো সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক নিয়ে ছ’দিনের শুনানি। তবে আজ কোনও রায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ ধর্মের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। আপাতত কয়েক দিনের মধ্যে রায় দেওয়ার কোনও সম্ভাবনাও নেই। আইনজীবীরা বলছেন, রায় ঘোষণা হতে পারে সেই জুলাই মাসে।

শুনানির শেষ দিনে আজ ফের প্রশ্ন ওঠে, তিন তালাক পাপাচার। ল’ বোর্ড এই প্রথা তুলে দিতে চায়। তা হলে এই প্রথা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে কেন সওয়াল করছে ল’ বোর্ড?

ল’ বোর্ডের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, তিন তালাক প্রথা তুলে দিতে দেশ জুড়ে কাজিদের ‘সার্কুলার’ জারি করা হবে। সেই সার্কুলারে বলা হবে নিকাহনামা বা বিয়ের চুক্তিতেই কাজিরা স্পষ্ট শর্ত রেখে দেবেন যে, স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তিন তালাক দিতে পারবেন না।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কাজিদের এই শর্ত বলাতে কি বাধ্য করতে পারে মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড। সিব্বল জানান, না। ল’ বোর্ড শুধু কাজিদের উপদেশই দিতে পারে। তার থেকে বেশি কিছু নয়।

যা শুনে মুসলিম মহিলা সংগঠনের আইনজীবী সারহা ফইজের তির্যক মন্তব্য, ‘‘ল’ বোর্ড আসলে কাজি তৈরির কারখানা। কিন্তু সব কাজি তো ওদের কথায় চলেন না। তিন তালাক উঠে গেলে ল’ বোর্ডের দোকানই উঠে যাবে!’’ আর এক আইনজীবী রুখসানা চৌধুরি যুক্তি দেন, ‘‘কাজিদের কোনও প্রশাসনিক বা বিচারবিভাগীয় ক্ষমতা নেই। মুসলিম মহিলাদের জন্য আইন-আদালত থাকবে, এটা তাদের সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার।’’

আরও পড়ুন:আপাতত ফাঁসি নয় কুলভূষণের

আইনজীবী অনিল গ্রোভারের যুক্তি, ‘‘ল’ বোর্ড গোটা মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না।’’ আর এক মামলাকারী শায়রা বানোর আইনজীবী অমিত চাড্ডা বলেন, ‘‘পার্সোনাল ল’ বোর্ডের উচিত, নিজেদের বিশ্বাস থেকে বেরিয়ে এসে তিন তালাককে পাপ বলে ঘোষণা করা।’’ এই তোপের মুখে দাঁড়িয়েও আজ সুপ্রিম কোর্টের কাছে সিব্বল ফের আর্জি জানিয়েছেন, শীর্ষ আদালত যেন কেন্দ্রীয় সরকারের ফাঁদে না পড়ে। কেন্দ্র যদি সামাজিক সংস্কারের দোহাই দিয়ে তিন তালাক প্রথা রদ করতে চায়, তা হলে তার জন্য নিজেরা আইন আনুক। তখন সেই আইন সাংবিধানিক কি না, তার বিচার হবে। এ ভাবে আদালতকে দিয়ে সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।

সিব্বলের আরও যুক্তি, মুসলিম পারিবারিক আইন মেনে যে কোনও প্রথা বা ধর্মাচরণ মুসলিমদের সাংবিধানিক অধিকার। সংবিধানের ২৫(১) অনুচ্ছেদে সবাইকে নিজের ধর্মাচরণের অধিকার দেওয়া রয়েছে। সিব্বল বলেন, ‘‘সমাজে এমন অনেক খারাপ ধর্মীয় বা সামাজিক প্রথাই রয়েছে। তার কোনটা পাপ, তা বিচার আদালতের কাজ নয়। এই পথে হাঁটতে শুরু করলে, আদালত পিচ্ছিল জমিতে গিয়ে দাঁড়াবে।’’

Triple talaq Muslim woman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy