Advertisement
E-Paper

শিমলা চুক্তি কী? অতীতে বার বার শর্ত ভেঙেও কেন তা স্থগিত করার ভয় দেখাচ্ছে পাকিস্তান? ভারতে কী প্রভাব পড়তে পারে

ভারতের বিরুদ্ধে আটটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। তার মধ্যে অন্যতম শিমলা চুক্তি-সহ ভারতের সঙ্গে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত করার হুঁশিয়ারি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ২২:১৪
What is Simla Agreement and how Pakistan violated it

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার তার পাল্টা হিসাবে আটটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ। তার মধ্যেই অন্যতম শিমলা চুক্তি সংক্রান্ত ঘোষণা। পাকিস্তানের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারতের সঙ্গে শিমলা চুক্তি-সহ সমস্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিত রাখার অধিকার রয়েছে তাদের। যত ক্ষণ না ভারত পাকিস্তানের অন্দরে সন্ত্রাসকে উস্কানি দেওয়া, আন্তর্জাতিক হত্যাকাণ্ড এবং আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা বন্ধ না করছে, তত দিন এই চুক্তি স্থগিত থাকতে পারে।’’

শিমলা চুক্তি কী?

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে পাকিস্তানের পরাজয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশের পর হিমাচল প্রদেশের শিমলায় ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ ১৯৭২ সালের ২ জুলাই। ওই বছরেরই ৪ অগস্ট থেকে চুক্তির শর্তাবলি কার্যকর হয়। এটি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমেই ভারত এবং পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা বা (এলওসি) নির্ধারিত হয়েছিল।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের পর ঢাকায় ৯৩ হাজার পাক-সেনা ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় সামরিক আত্মসমর্পণ আর দেখা যায়নি। পূর্বে আত্মসমর্পণের ফলে পশ্চিমের সীমান্তেও যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জ়ুলফিকর আলি ভুট্টো এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শিমলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যাবতীয় সংঘাত শেষ করা, সীমান্তে শান্তি স্থাপন করা এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তোলাই ছিল এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। শিমলা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী—

  • ভারত এবং পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।
  • জম্মু ও কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির ফলে যে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছে, ভারত এবং পাকিস্তান, উভয় পক্ষই তা মেনে চলবে। পারস্পরিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও কোনও পক্ষ একতরফা ভাবে এর পরিবর্তন চাইবে না। এই রেখা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হুমকি বা বলপ্রয়োগ থেকে উভয় পক্ষ বিরত থাকবে।
  • চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ৩০ দিনের মধ্যে দুই দেশকে সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে।

শিমলা চুক্তি নিয়ে বৃহস্পতিবার পাকিস্তান যে ঘোষণা করেছে, তা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, শিমলা চুক্তিতে যুদ্ধবিরতি রেখাকে নিয়ন্ত্রণরেখা হিসেবে চিহ্নিত করার কথা বলা হয়েছে। পাকিস্তান যদি শিমলা চুক্তি স্থগিত করে, তবে এই নিয়ন্ত্রণরেখার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে। অতীতে অবশ্য পাকিস্তান বার বার এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। সিয়াচেন থেকে শুরু করে কার্গিলে যুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি সেনা নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করেছে। তবে এ বিষয়ে ভারতের অভিযোগ তারা মানতে চায়নি। এ বার পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ভারতের পদক্ষেপের পাল্টা দিতে গিয়ে সেই শিমলা চুক্তি স্থগিত করার হুঁশিয়ারি দিল ইসলামাবাদ।

Pahalgam Terror Attack Jammu and Kahsmir Pakistan Simla Agreement
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy