দুবাইয়ে এয়ার শো চলাকালীন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট উইং কমান্ডার নমন স্যালের। হিমাচল প্রদেশের কাংরা জেলার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। শুক্রবার দুবাইয়ের অনুষ্ঠানে ভারতীয় যুদ্ধবিমান ও়ড়াচ্ছিলেন তিনিই। একটি বিশেষ কৌশল প্রদর্শনের সময় শূন্যে বিমানটি ভারসাম্য হারায় এবং ভেঙে পড়ে। মাটিতে আছ়ড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তেজসে আগুন ধরে যায়। নমনশের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বায়ুসেনা। বিবৃতি জারি করে নিহত পাইলটের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে তারা।
তেজস লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমান। এর ব্যর্থতার হার খুব কম। ২৪ বছরের ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ভেঙে পড়ল তেজস। মনে করা হচ্ছে, এয়ার শো চলাকালীন বিমানটির গতি এবং উচ্চতা পর্যাপ্ত ছিল না। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেও দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। বায়ুসেনার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দুবাই এয়ার শো-তে প্রদর্শনী চলাকালীন বায়ুসেনার তেজস যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। পাইলট উইং কমান্ডার নমন স্যালের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় বায়ুসেনা গভীর ভাবে শোকাহত। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা ওঁর পরিবারের পাশে আছি। দুর্ঘটনার কারণ জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:
৩৭ বছরের নমনকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ হিমাচল প্রদেশ। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু সমাজমাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘দেশ এক জন বীর, কর্তব্যপরায়ণ, নির্ভীক পাইলটকে হারাল।’’ নমন পরিবারের প্রতিও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তিনি। হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রায় ঠাকুর দুবাইয়ের দুর্ঘটনাকে ‘অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সুজনপুরের সৈনিক স্কুল থেকে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করে নমন বায়ুসেনায় যোগ দিয়েছিলেন ২০০৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর। তাঁর স্ত্রীও বায়ুসেনার অফিসার। বর্তমানে একটি কোর্সের সূত্রে তিনি কলকাতায় আছেন। বাড়িতে নমনের ছ’বছরের কন্যা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। নমনের বাবা জগন্নাথ সায়্যাল ভারতীয় সেনার মেডিক্যাল কর্পসে কর্মরত ছিলেন। পরে শিক্ষা বিভাগে চাকরি করেন। অবসরের আগে তিনি ছিলেন প্রিন্সিপাল। বর্তমানে নমনের বাবা-মা রয়েছেন তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তূরের সুলুর এয়ার ফোর্স স্টেশনে।