বুথ ফেরত সমীক্ষায় বিধানসভায় জয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। এ বার হরিয়ানায় চাঙ্গা প্রদেশ কংগ্রেস শিবিরে এখন আলোচনা একটাই। দশ বছর পরে কে হতে চলেছেন পরবর্তী কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী? স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের গরিষ্ঠ অংশের মত, শেষ দৌড়ে কুমারী শৈলজাকে পিছনে ফেলে বাজিমাৎ করবেন জাঠ নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। সেই সঙ্গে চলছে জাঠ এবং দলিত ভোটের প্রভাব এবং ভারসাম্যের খুঁটিনাটি নিয়ে চর্চা।
বুথ ফেরত সমীক্ষা কংগ্রেসের পক্ষে যাওয়ার পরেই হুডা সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, “রাজনীতিতে উচ্চাকাঙ্খা সবারই থাকতে পারে। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে, যেখানে নির্বাচিত বিধায়কেরা মতামত দেবেন এবং হাইকম্যান্ড সিদ্ধান্ত নেবে। মুখ্যমন্ত্রী যে কেউ হতে পারেন। এটা গণতন্ত্র। কিন্তু হাইকম্যান্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাকেই মানতে হবে। উনি (কুমারী শৈলজা) আমাদের বহু
পুরনো নেত্রী।”
ফলাফল প্রকাশের দু’দিন আগে রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ‘গণতান্ত্রিক পথ’ অর্থাৎ বিধায়কদের সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ তোলার অর্থই হুডার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়নের সম্ভাবনা বাড়া। কারণ, যাঁরা টিকিট পেয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই হুডা-ঘনিষ্ঠ বলেই জানাচ্ছে রাজনৈতিক সূত্র। লোকসভা ভোটেও কংগ্রেসের টিকিট বণ্টনেও মূল ভূমিকা ছিল তাঁরই, শৈলজার নয়। তবে পাশাপাশি এ কথাও বলা হচ্ছে, কংগ্রেস জিতে এলে সরকারে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থাকার সম্ভাবনাও যথেষ্ট। সে ক্ষেত্রে এক জন দলিত উপমুখ্যমন্ত্রী করে জাঠ এবং দলিত এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যেই ভারসাম্য রাখা সম্ভব হবে।
স্থানীয় মহল অবশ্য এ কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছে, ২০০৫-এর হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে বিশনই সম্প্রদায়ের নেতা ভজন লালের নেতৃত্বে ভোটে লড়ে কংগ্রেস যখন ৯০টির মধ্যে ৬৭টি আসন পায়, তখন কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী করা হয় জাঠ নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডাকেই। তখন কেন্দ্রে কংগ্রেসের শাসন ছিল। হরিয়ানায় কখনও কোনও দলিত অথবা মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হননি। ফলে জাতীয় রাজনীতির প্রশ্নে তফসিলি জাতি ও জনজাতিকে বার্তা দিতে শৈলজাকে মুখ্যমন্ত্রী করার বিষয়টি চিন্তাভাবনার একটি দিক। কিন্তু হরিয়ানার জাঠ প্রভাব এবং প্রদেশ কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়ানো নেতাদের মধ্যে হুডার প্রভাবের দিকটিকে এখন অগ্রাহ্য করা কঠিন কংগ্রেসের নেতৃত্বের পক্ষে। ফলে শৈলজাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে না ভাবা হলেও (অর্থাৎ তাঁকে সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করিয়ে ফের উপনির্বাচনের পথে না হেঁটে) দলে কোনও বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে সব প্রক্রিয়াই শুরু হবে ফলাফল প্রকাশের পর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)