Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Bipin rawat

CDS: রাওয়তের পরে সেনা সর্বাধিনায়ক খোঁজা মোদী সরকারের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ

এক বছর পরে উরি হামলার প্রত্যাঘাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করে জঙ্গি শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা।

২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন রাওয়ত।

২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন রাওয়ত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:১২
Share: Save:

২০১৫ সালের জুন মাস। এনএসসিএন খাপলাং জঙ্গি গোষ্ঠীর হানায় মারা যান ১৮ জন জওয়ান। পাঁচ দিন পরে মায়ানমারের ভিতরে ঢুকে প্রত্যাঘাত চালায় ভারতীয় সেনা। নিহত হয় শতাধিক জঙ্গি। ওই হামলার পিছনে মূল মাথা ছিলেন বিপিন রাওয়ত।

এক বছর পরে উরি হামলার প্রত্যাঘাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করে জঙ্গি শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। হামলার প্রস্তুতি থেকে অপারেশনের নজরদারি-সবই সাউথ ব্লক থেকে করেছিলেন রাওয়ত।

দক্ষ ওই অফিসার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এতটাই প্রিয় ছিলেন যে বিতর্ককে পাত্তা না দিয়ে দুই বর্ষীয়ান সেনা অফিসারকে ডিঙিয়ে রাওয়তকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করেন তিনি। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন রাওয়ত। ২০১৯ সালে রাওয়তের অবসরের ঠিক সাত দিন আগে ২৪ ডিসেম্বর চিফ অব ডিফেন্স স্টাফের পদ ঘোষণা করে মোদী সরকার। আর রাওয়তের অবসরের ঠিক এক দিন আগে ওই পদে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। সরকারের সঙ্গে তিন সামরিক বাহিনীর সংযোগ রক্ষাকারী ‘সিঙ্গল পয়েন্ট অ্যাডভাইজ়ার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয় রাওয়তকে।

গলওয়ানে চিন, কাশ্মীরে জঙ্গি সমস্যা, নাগাল্যান্ডে সেনার গুলিতে সাধারণ গ্রামবাসীর মৃত্যুতে অশান্ত উত্তর-পূর্ব নিয়ে যখন বিব্রত নরেন্দ্র মোদী সরকার তখন রাওয়তের আচমকা মৃত্যু সরকারের জন্য বাড়তি সমস্যা ডেকে আনল বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মূলত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ এমন একটি পদ যা বেশি দিন সরকারের পক্ষে খালি রাখা সম্ভব নয়। কারণ পদাধিকার বলে সিডিএস প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকা ‘নিউক্লিয়ার কমান্ড অথরিটি’র যেমন এক জন সদস্য তেমনই তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পরামর্শদাতা কমিটির প্রধান তিনি। সরকারের সামরিক ক্ষেত্রে গোলাবারুদ থেকে অস্ত্র কেনা, সব ক্ষেত্রেই অন্যতম পরামর্শদাতা হলেন সিডিএস। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদী সরকার যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা বা যে কোনও মুহূর্তে অভিযানের জন্য বাহিনীকে প্রস্তুত রাখার প্রশ্নে তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় গড়ে তুলতে ‘ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড’ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে কাজ শুরু হয়েছিল রাওয়তের নেতৃত্বে। ফলে তাঁর মৃত্যুতে যাতে সেই কাজ গতি না হারায় সেটি নিশ্চিত করাও এখন সরকারের দায়িত্ব। শাসক শিবির বুঝতে পারছে রাওয়তের যোগ্য বিকল্প চট করে পাওয়া কঠিন। বিশেষ করে তিন স্টাফের প্রধান হিসেবে এমন এক জনকে বেছে নিতে হবে যিনি পদমর্যাদায় তিন বাহিনীর কোনও একটিতে সর্বাধিনায়ক ছিলেন বা ন্যূনতম ‘ফোর স্টার শ্রেণির’ অফিসার হিসেবে অবসর নিয়েছেন এবং যাঁর সঙ্গে সরকারের সুসম্পর্ক রয়েছে।

সূত্রের মতে, প্রাক্তন কোনও সেনাপ্রধানের সঙ্গেই পরবর্তী সিডিএসের দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান সেনাপ্রধান এম এম নরবণে। বাকি দুই প্রধানের মধ্যে তিনিই এই মুহূর্তে বয়সের দিক থেকে সিনিয়র। নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি মাত্র এক সপ্তাহ আগে দায়িত্ব নিয়েছেন। বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেকরাম চৌধুরি দায়িত্ব নিয়েছেন মাত্র আড়াই মাস আগে। সেখানে নরবণে আগামী এপ্রিল মাসে অবসর নিতে চলেছেন। সূত্রের মতে, বর্তমান সেনাপ্রধানের সঙ্গে শাসক শিবিরের সম্পর্ক খারাপ নয়। সুতরাং সিনিয়রটির বিষয়টি মাথায় রাখলে দৌড়ে নরবণেই আপাতত এগিয়ে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bipin rawat CDS Indian Army
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE