মধ্যরাতে সিবিআই ডিরেক্টরের দায়িত্ব থেকে অলোক বর্মাকে সরানো নিয়ে কঠিন প্রশ্নের মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ প্রশ্ন তুললেন, এত তাড়াহুড়োর কী ছিল?
সিবিআই ডিরেক্টরের দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন বর্মা। আজ শুনানির শেষে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলার রায় সংরক্ষিত রেখেছে। কিন্তু সরকারের চিন্তা বাড়িয়ে কঠিন প্রশ্নও তুলেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল, জুলাই থেকে ডিরেক্টর বর্মা ও স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার মধ্যে বিবাদ চলছিল। এতে সিবিআইয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছিল বলেই তাঁদের সরানো হয়। উল্টো দিকে বর্মার যুক্তি ছিল, তাঁকে বাছাই করেছে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও বিরোধী দলনেতার কমিটি। ডিরেক্টরের দু’বছরের মেয়াদ বাঁধা। তার আগে তাঁকে সরানো বা বদলি করা যায় না। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘যদি জুলাই থেকেই সহ্য করছিলেন, তা হলে হঠাৎ পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল না। এখানে শুধু আইন মেনে চলার প্রশ্ন নয়, আইন ভাল ভাবে মেনে চলার প্রশ্ন। ২৩ অক্টোবরই ওই সিদ্ধান্ত নিতে হল কেন? জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলেও কমিটির মত নেওয়াই কি উচিত ছিল না?’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘পুরোপুরি নিরপেক্ষ থাকলেন না কেন?’’
রাফাল নিয়ে তদন্তের নির্দেশ বর্মা দিতে পারেন, এই আশঙ্কায় তাঁকে সরানো হয় বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন বলে পরিচিত আস্থানার বিরুদ্ধেও তদন্তের নির্দেশ দেন বর্মা। আজ জনস্বার্থ মামলাকারী ‘কমন কজ়’-এর আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে বলেন, ‘‘বর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে অগস্টে। দু’মাস পরে হঠাৎ তাঁকে সরানোর সুপারিশ করে ভিজিল্যান্স কমিশন। এর পিছনে চোখে যা দেখা যাচ্ছে, তার পিছনেও অনেক কারণ রয়েছে।’’ আস্থানার আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, ‘‘ভিজিল্যান্স তদন্তে বর্মার বিরুদ্ধে বিরূপ কিছু মিললে, সরকারের ব্যবস্থা নেওয়াই উচিত।’’
সরকারের যুক্তি, বর্মা ডিরেক্টর রয়েছেন। তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর বসানো হয়েছে। বর্মার আইনজীবী ফলি নরিম্যানের প্রশ্ন, সব দায়িত্ব নিয়ে নেওয়ার পর বর্মা ডিরেক্টরের ভিজিটিং কার্ড নিয়ে কী করবেন? তাঁর যুক্তি, ‘‘দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া মানেই বদলি করা।’’