হন্তদন্ত হয়ে থানায় হাজির হলেন এক যুবক। চোখেমুখে একরাশ বিরক্তি এবং একই সঙ্গে উৎকণ্ঠার ছাপ। থানায় ঢুকেই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সটান প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ‘‘আমাকে আপনারা মৃত বলে ঘোষণা করলেন কেন?’’ যুবকের এমন প্রশ্নে পুলিশ হতভম্ব হয়ে যান পুলিশকর্মীরা। ঘটনাটি ছত্তীসগঢ়ের জশপুর জেলার সিতোঙ্গা গ্রামের।
যুবকের নামে সীমিত খাখা। শনিবার রাতে পঞ্চায়েত প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় হাজির হন সীমিত। তিনি মৃত নন, এখনও বেঁচে আছেন— এটি প্রমাণ করার জন্য পঞ্চায়েত প্রধানকে সঙ্গে করে থানায় যান। প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে পূর্ণনগর-তুরিতোঙ্গরির জঙ্গলে একটি আধপোড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহটি সীমিত খাখার বলে শনাক্ত করে তাঁর পরিবার। সীমিতকে খুনের অভিযোগ ওঠে রামজিৎ রাম, বীরেন্দ্র রাম, শীতল মিঞ্জ এবং জিতু রামের বিরুদ্ধে। সীমিতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রামজিৎ এবং বীরেন্দ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকি দু’জন পলাতক।
ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেহটি শনাক্ত করে সীমিতের পরিবার। সেইমতোই মামলা রুজু করা হয়। কিন্তু হঠাৎ সেই ঘটনা নয়া মোড় নেয় যখন সীমিত নিজে এসে দাবি করেন, তিনি মরেননি বেঁচে আছেন। তিনি জানতেই পারেননি যে, পরিবার তাঁকে মৃত বলে শনাক্ত করেছে। পুলিশের কাছে সীমিত জানান, ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে কয়েক জনের সঙ্গে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। ওই দলটি যখন রাঁচীতে ছিল, তখন তিনি দল থেকে ছিটকে পড়েন। তাঁর কাছে ফোন না থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। নিজের গ্রামে ফিরে জানতে পারেন, তিনি খুন হয়ে গিয়েছেন। তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে খুন করার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই কথা শোনার পর সীমিত হতভম্ব হয়ে যান। পরিবার এবং পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, ‘‘কোনও রকম ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই অন্য এক জনকে সীমিত বলে দাগিয়ে দেওয়া হল কেন? আমি বেঁচে আছি। আমাকে খুন করা হয়নি। আমার খুনের জন্য যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা আমার বন্ধু। ওঁদের ছেড়ে দেওয়া হোক।’’