স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বার করে দেওয়া যায় না। তাঁর অন্য আশ্রয় থাকলেও নয়। কারণ স্বামীর বাড়িতে থাকার অধিকার রয়েছে বিধবা পত্নীর। একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল কেরল হাই কোর্ট। খারিজ করে দেওয়া হল শ্বশুরবাড়ির আবেদন।
কেরলের ৪১ বছরের বধূ শ্বশুরবাড়িতে নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, তার পর থেকেই তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁকে এবং তাঁর সন্তানকে বাড়ি থেকে বার করেও দেওয়া হয়েছিল। ২০০৫ সালের গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে মহিলাদের নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছিলেন ওই বধূ। তবে আদালত প্রাথমিক ভাবে তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্য ছিল, স্বামীর মৃত্যুর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে আর কোনও ‘গার্হস্থ্য’ সম্পর্ক নেই বধূর। ফলে তাঁর আবেদনও গ্রহণযোগ্য নয়।
আরও পড়ুন:
ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে গিয়েছিলেন মহিলা। সেখানে তাঁর আবেদন গ্রাহ্য হয়। কিন্তু এর পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ওই মহিলার আলাদা সম্পত্তি রয়েছে। তিনি বাপের বাড়িতেই থাকেন। তাঁর শ্বশুরবাড়িতে থাকার আবেদন তাই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এই যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে কেরল হাই কোর্ট। বিচারপতি এমবি স্নেহলতার পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে এবং তিনি স্বামীর বাড়িতেই থাকতেন। ফলে এই মামলা গার্হস্থ্য হিংসা আইনের ২(এ), ২(এফ) এবং ২(এস) ধারার অধীনে পড়ে। আদালত জানায়, স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর তাঁর বাড়িতে থাকার অধিকার কোনও মালিকানার উপর নির্ভর করে না। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি পর্যবেক্ষণও তুলে ধরেন কেরল হাই কোর্টের বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘নারীর নিরাপত্তা এবং সম্মানের জন্য এই অধিকার গুরুত্বপূর্ণ। গার্হস্থ্য হিংসার কারণে কেউ যাতে ঘরছাড়া না-হন, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।