শেষমেশ বাবার ইচ্ছাতেই সায় দিলেন ছেলে। লখনউ ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রে মুলায়ম সিংহ যাদবের পছন্দের প্রার্থী ছিলেন অপর্ণা যাদব। এক বছর আগে থেকেই মুলায়ম ঠিক করে রেখেছেন এই আসনে অপর্ণাই সমাজবাদী পার্টির সেরা বাছাই। তিনি মুলায়ম পুত্র প্রতীক যাদবের স্ত্রী।
তবে দলের অন্দরেই জল্পনা ছিল, বাবা-ছেলের সাম্প্রতিক টানাপড়েনে তাতে বাধ সাধতে পারেন অখিলেশ। ‘টিম শিবপালে’র ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অপর্ণার টিকিট পাওয়াটা যে সহজ হবে না তা বলতে শুরু করেন সপা কর্মীদের একাংশ। কিন্তু, সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল, লখনউ ক্যান্টমেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হবেন অপর্ণা।
আরও পড়ুন
অখিলেশের প্রচারে বাংলার পটুয়ারাও
এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন পার্টির নতুন সভাপতি অখিলেশ যাদব। তবে লখনউ ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম জানানো বাকি রেখেছিলেন তিনি। তাতে বাবার পছন্দের অপর্ণাকেই প্রার্থী করেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুর করেছিল। কারণটাও সহজবোধ্য। অখিলেশের কাকা শিবপাল যাদবের ঘনিষ্ঠ হওয়াতে অপর্ণার প্রার্থী হওয়াটা নিতান্তই কঠিন বলে মনে করেছিলেন অনেকে। তা ছাড়া, ভবিষ্যতে অখিলেশের চ্যালেঞ্জার হিসাবেও উঠে আসে অপর্ণার নাম।
তবে শুধু ঘরেই নয়। রাজনীতির আঙিনাতেও অপর্ণার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে কড়া প্রতিপক্ষ। ওই কেন্দ্রে তাঁর লড়াই রীতা বহুগুণা যোশীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে রীতার নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। ২৪ বছর কংগ্রেসের ঘর করার পর গত অক্টোবরেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ এন বহুগুণার মেয়ে রীতা। ২০১২-র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির মধ্যে থেকেও যিনি ২০ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। সে বার ৪০৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসন দখল করতে পেরেছিল কংগ্রেস। আর সে ভরাডুবির দায় নিজের কাঁধে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রীতা। এ বার অবশ্য ছবি পুরো উল্টে গিয়েছে। চিরশত্রু বিজেপিকে ঠেকাতে সপা-র সঙ্গেই হাত মিলিয়ে বিধানসভায় লড়বে কংগ্রেস। তবে তফাৎটা হল এ বার রীতা থাকবেন বিজেপি-তে, কংগ্রেসে নয়।
আরও পড়ুন
প্রথম দিনেই অঘটন, জাল্লিকাট্টুর বলি দুই
২০১৬-তে দলীয় প্রতীক সাইকেলে অপর্ণা। ছবি: ফেসবুক।
অপর্ণার ঘনিষ্ঠ সূত্রের অবশ্য দাবি, ঘরে-বাইরের কঠিন লড়াইয়ের কথা জেনেও অবিচলিতই থাকছেন তিনি। ওই কেন্দ্রে তিনিই লড়ছেন মনে করে বছর খানেক ধরেই দলীয় কর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। টিকট পাওয়ার আগেই রাজনীতি ও ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস-এ ম্যাঞ্চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী অপর্ণা বলেন, “আমি একশো শতাংশ নিশ্চিত, লখনউ ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রের টিকিট আমিই পাব। আর এখানে জেতার জন্য জানপ্রাণ লড়িয়ে দেব।” শেষমেশ অখিলেশের সবুজ সঙ্কেত মেলায় এ বার নয়া প্রস্তুতি শুরু অপর্ণার।