রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপরে লোকসভায় ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্কের প্রথম দিন বেনজির ভাবে ভেস্তে গিয়েছে প্রশ্ন ফাঁস-কাণ্ডের জেরে। আগামিকাল থেকে ফের বসবে সংসদের অধিবেশন। এখন দেখার, সংসদীয় মর্যাদার কথা মাথায় রেখে প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে আলোচনার দাবি থেকে সরে এসে, কাল লোকসভায় বিতর্ক শুরুর সুযোগ বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ করে দেবে, না কি বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা আরও অগ্রসর হবে। যদিও শাসক শিবির সূত্রের মতে, আশা করা হচ্ছে কাল দুপুরের মধ্যে লোকসভা চলার প্রশ্নে প্রয়োজনীয় সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের ইস্তফার দাবি থেকে বিরোধীরা যে সরছেন না, তা আজ সমাজমাধ্যমে স্পষ্ট করেছেন কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ।
সরকারের উপরে চাপ বাড়িয়ে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে আগামিকাল সকালে সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে ধর্নায় বসছেন ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। প্রশ্ন ফাঁস, মূল্যবৃদ্ধি, অগ্নিবীর প্রকল্প, রেল দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে তুলে সরকার বিরোধিতায় সরব হবেন তাঁরা। পাশাপাশি, কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রশ্ন ফাঁস হয়ে লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অপরাধে কেউ যদি দোষী হন, তা হলে তিনি শিক্ষামন্ত্রী। কংগ্রেস মনে করছে, শিক্ষামন্ত্রী যতই দায় স্বীকার করুন না কেন, নিজের দায়বদ্ধতা এড়াতে পারেন না। সে কারণে কাল থেকে সংসদে ও সংসদের বাইরে ধর্মেন্দ্রের ইস্তফার দাবিতে প্রবল ভাবে সরব হবে কংগ্রেস। সংসদের উভয় কক্ষে তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস, রেল দুর্ঘটনা, বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার মতো বিভিন্ন ঘটনাতে গোড়াতেই ব্যাকফুটে তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বভাবতই, রক্তের স্বাদ পাওয়া রাহুলেরা শিক্ষামন্ত্রীর ইস্তাফার দাবিতে কতটা লোকসভার ভিতরে সরব হবেন, তার উপরে নির্ভর করছে ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্কের শুরু হওয়া। জয়রাম আজ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘এই দুর্নীতির উৎস কোথায়? উৎস বিজেপি শাসিত বিহার, গুজরাত ও মধ্যপ্রদেশ। শিক্ষামন্ত্রী প্রথমে বললেন, এটা বড় ঘটনা নয়, পরে সিবিআই তদন্তের কথা বললেন ও উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের কথা হল। আমাদের দাবি, অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে’। বিরোধী আম আদমি পার্টি জানিয়েছে, তাঁদের সাংসদেরা আগামিকাল ধর্নায় যোগ দেবেন।
আগামিকাল লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্কে শাসক শিবিরের পক্ষ থেকে আলোচনা শুরু করার কথা বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরের। দলের দ্বিতীয় বক্তা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মেয়ে বাঁশুরি স্বরাজ। শাসক শিবিরের বক্তব্য, ইতিমধ্যেই লোকসভায় বিতর্কের প্রথম দিন ভেস্তে গিয়েছে। বিরোধীরা চাইলে বিতর্কে অংশ নিয়ে সব ধরনের বিষয় নিয়ে সরকারের সমালোচনা করতেই পারেন। বিরোধীদের সব অভিযোগের জবাব দিতে সরকার প্রস্তুত। অন্য দিকে, রাজ্যসভায় গত শুক্রবার থেকেই রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও আগামিকাল সংসদের উচ্চ কক্ষে ধর্মেন্দ্রের ইস্তফার দাবিতে প্রথম পর্বের অধিবেশন ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)