পরিজনদের সঙ্গে রক্ষা গোপাল।
ইংরেজিতে একশোয় একশো। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে একশোয় একশো। অর্থনীতিতেও একশোয় একশো! আর বাকি দু’টো বিষয়ে? ইতিহাস এবং সাইকোলজিতে ১০০ শতাংশ নম্বর একটুর জন্য ফসকে গিয়েছে। দু’টোতেই এক কম হয়ে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯৯। প্রত্যেকটা বিষয়ে নম্বরের এই ঘনঘটা সাধারণত বিজ্ঞান বা কমার্সের পড়ুয়াদের মার্কশিটেই দেখা যায়। সাধারণত তাঁরাই বোর্ডের পরীক্ষায় প্রথম স্থান ধরে রাখেন। কিন্তু সায়েন্স, কমার্সের সহ-পরীক্ষার্থীদের টপকে এ বার বিরল নজির গড়লেন নয়ডার রক্ষা। কলা বিভাগের এই ছাত্রীই এবারে সিবিএসই (দ্বাদশ)-তে প্রথম হলেন। ৯৯.৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে।
রক্ষা গোপাল। নয়ডার অ্যামিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্রী। রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ প্রথম ফোনটা পেয়েই চমকে উঠেছিলেন রক্ষা। স্কুল থেকে ফোন করে রক্ষাকে তাঁর প্রথম হওয়ার খবরটা দেওয়া হয়। তখন নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। সারা দেশে মোট ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৯০ জন পড়ুয়াকে টপকে তিনিই সিবিএসই (দ্বাদশ)-র প্রথম হয়েছেন! তাও আবার কলা বিভাগ থেকে! বিশ্বাস করতে সময় লাগে বেশ কিছু ক্ষণ। তার পর থেকেই আসতে শুরু করে শুভেচ্ছার ফোন। বাড়িতে ভিড় করে ফেলে সংবাদমাধ্যম।
কী বলছেন রক্ষা গোপাল? এরপর তাঁর লক্ষ্য কী?
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়তে চান তিনি। কোনও পছন্দের কলেজও নেই। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত যে কোনও কলেজে ভর্তি হলেই হল। ভবিষ্যতে এই বিষয়টি নিয়েই এগোতে চান। তবে শুধু রাষ্ট্রবিজ্ঞানই নয়, অর্থনীতিও তাঁর পছন্দের বিষয়। রক্ষার বাবা গোপাল শ্রীনিবাস গুজরাত পেট্রোলিয়াম কর্পোরশনের চিফ ফিনান্স অফিসার। গর্বিত বাবা বললেন, ‘‘ও ছোট থেকেই ভীষণ মেধাবী। কিন্তু প্রথম হবে কখনও ভাবিনি।’’
আরও পড়ুন: বাঁধাধরা পড়ার ধাত নেই প্রথম বার প্রথম অন্বেষার
একই ভাবে খুশির জোয়ার এখন ভূমি সাবন্ত, আদিত্য জৈন, মন্নত লুথরার বাড়িতেও। চণ্ডীগড়ের ভূমি ৯৯.৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় এবং আদিত্য, মন্নত ৯৯.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে যুগ্ম ভাবে তৃতীয় হয়েছেন। তাঁদের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ণ মন্ত্রী প্রকাশ জাভডেকর। আর যাঁদের ফল আশানুরূপ হয়নি, তাঁদের আরও ভাল করে পড়াশোনা করতে বলেছেন। তা ছাড়া সিবিএসই-র তরফ থেকে একটি সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং হেল্পলাইন নম্বরও ঘোষণা করা হয়েছে। এ দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত ৬৫ জন কাউন্সেলর ফোনে পরামর্শ দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকবেন। কোনও পড়ুয়া বা তাঁর অভিভাবক অত্যধিক ভেঙে পড়লে ১৮০০০১১৮০০৪ নম্বরে ফোন করতে পারেন।
সারা দেশের ১০,৬৭৮টি স্কুল থেকে মোট ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮৯১ জন পড়ুয়া এই পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের থেকে এই সংখ্যাটা ২.৮২ শতাংশ বেশি। ৯ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষা চলেছিল। এই পরীক্ষায় পাশের হার ৮২ শতাংশ। যা গত বছরের তুলনায় এক শতাংশ কম বলে জানিয়েছে বোর্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy