দামি দামি জিনিস অর্ডার করতেন আমাজন থেকে। বাড়ি এসে সেই সব জিনিস পৌঁছেও দিতেন অনলাইন এই শপিং সংস্থার ডেলিভারি এজেন্টরা। তবে সেই সব জিনিসের বেশিরভাগটাই ফেরত পাঠাতেন মহিলা। একই প্যাকেট, একই র্যাপিং। শুধু বদলে যেত ভিতরের মালমশলা। ফেরত পাঠানোর সময় মূল্যবান জিনিসটি বের করে নিয়ে একই রকম দেখতে নিম্নমানের একটি সামগ্রী ভরে দিতেন প্যাকেটের মধ্যে। আর এই ভাবেই আন্তর্জাতিক এই অনলাইন সংস্থাকে দিনের পর দিন বোকা বানিয়েছেন দীপান্বিতা ঘোষ। আর্থিক প্রতারণার দায়ে বেঙ্গালুরুর হেন্নুর থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে দীপান্বিতাকে।
কলকাতার মেয়ে ৩২ বছরের দীপান্বিতা স্বামীর সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। সেখানেই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন তিনি। অনলাইনে শপিং করার নেশা তাঁর বহু দিনের। আমাজনে দেনু টি নাইয়ার, ঘোষ নামে তাঁর একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট আছে। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায়ই মোবাইল, টিভি, এসএলআর ক্যামেরার মতো দামি দামি জিনিস কিনতেন দীপান্বিতা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই অ্যামাজনের কাস্টমার রিটার্ন সিস্টেম বা সি-রিটার্ন দিয়ে তা ফেরত পাঠাতেন।
আরও পড়ুন: পাড়ে দাঁড়িয়ে ফুঁসছে বাবা, নৌকোয় ‘যদিদং হৃদয়ং’-এ ব্যস্ত মেয়ে
পূর্ব বেঙ্গালুরুর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অজয় হিলোরি জানালেন, দীপান্বিতা যেখানে অর্ডার ডেলিভারি নিতেন সেখান থেকে কখনও তা রিটার্ন করতেন না। এমনকী অনেক সময় দু’টো ঠিকানা দু’টো আলাদা শহরেরও হত। শুধু ফেরত দেওয়ার সময় প্যাকেজিং একই রেখে বদলে দিতেন ভিতরের জিনিসটা। দামি প্রোডাক্টের বদলে প্রায় একই দেখতে নিম্নমানের প্রোডাক্ট ভরা হত প্যাকেটে। ফেরত দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক আ্যাকাউন্টে টাকা রিটার্নও পেয়ে যেতেন। এ ভাবেই প্রায় এক বছর ধরে আমাজনকে বোকা বানাচ্ছিলেন দীপান্বিতা।
সম্প্রতি ঘটনাটি নজরে আসে আমাজন কর্তৃপক্ষের। দেখা যায়, দেনু টি নাইয়ার, ঘোষের অ্যাকাউন্ট থেকে মূল্যবান সামগ্রীর বদলে নিম্নমানের প্রোডাক্ট রিটার্ন করা হয়েছে একাধিকবার। এরপরেই আমাজনের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানান হয়।
ঘটনার তদন্তে নামে হেন্নুর পুলিশ। তদন্তে দেখা যায়, অন্য একটি শপিং সংস্থা চালাতেন দীপান্বিতা। রাজর্ষি৯৬ (Rajarshi96) ছদ্মনামে এই শপিং সংস্থাটি চালাতেন তিনি। আমাজন থেকে কেনা ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট সেখানে বিক্রি করতেন তিনি। যখন ক্রেতারা তাঁর শপিং সাইটে অর্ডার দিত, তখন তিনি একই প্রডাক্ট আমাজনে অর্ডার দিতেন এবং সেই প্রোডাক্ট সরাসরি কাস্টোমারদের ঠিকানায় পাঠাতেন। কিন্তু ফেরত দেওয়ার সময় নিজের ঠিকানা থেকেই নিম্নমানের অন্য একটি প্রোডাক্ট ফেরত পাঠিয়ে দিতেন। ফেরতের টাকাও পেয়ে যেতেন নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ ভাবে ১০৪টি প্রোডাক্ট কিনে ৬৯ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৪০ টাকা প্রতারণা করেছিলেন দীপান্বিতা। আমাজনের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণার দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy