Advertisement
E-Paper

ছেলে সন্তানের জন্য ভাইকে নিয়োগের চাপ, স্বামীকে খুনই করে ফেললেন স্ত্রী

পর পর দু’টো মেয়ে। তার উপর যদি আবার একটা মেয়ে হয়! পুত্র সন্তানের জন্য ভাইয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে স্ত্রীকে জোরাজুরি করেই যাচ্ছিলেন স্বামী। রাজি না হওয়ায় চলছিল হুমকিও।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ১৪:৪৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পর পর দু’টো মেয়ে। তার উপর যদি আবার একটা মেয়ে হয়! পুত্র সন্তানের জন্য ভাইয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে স্ত্রীকে জোরাজুরি করেই যাচ্ছিলেন স্বামী। রাজি না হওয়ায় চলছিল হুমকিও। ভাড়ায় লোক এনে গণধর্ষণ করিয়ে স্ত্রীকে বেচে দেওয়ারও হুমকি চলছিল। টানা এক বছর ধরে নাকি এ ভাবেই লাগাতার স্বামীর অত্যাচার সয়েছেন। শেষে অতিষ্ঠ হয়ে সেই ভাইয়ের সঙ্গেই পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুন করলেন স্ত্রী। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিল্লির জইতপুরে। খুনের অভিযোগে স্ত্রী মীনা দেবী এবং তাঁর ভাই গোবিন্দকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, অনেক বছর আগে রাম বিশালের সঙ্গে বিয়ে হয় মীনার। তাঁদের পর পর দু’টো মেয়ে হয়। এর পর থেকেই তাঁদের সম্পর্কে গোলমালের শুরু। ছেলে না হওয়ায় স্ত্রীকে মারধর করতে শুরু করেন রাম বিলাস। অভিযোগ, আবারও কন্যা সন্তান হতে চলেছে জানতে পেরে একাধিক বার স্ত্রীকে গর্ভপাতেও বাধ্য করেছেন। তার পর এক সময় তুলতে শুরু করেন নতুন দাবি। পুত্র সন্তানের জন্য মীনাকে তাঁর ভাই গোবিন্দের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে জোরাজুরি শুরু করেন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চলতেই থাকে অত্যাচার আর হুমকি। দিনের পর দিন স্বামীর এই অত্যাচার আর মেনে নিতে পারেননি মীনা দেবী। ভাই গোবিন্দের সঙ্গে স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করে বসেন।

আরও পড়ুন: বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্যানসারের জন্য দায়ী খারাপ ভাগ্য, দাবি বিজ্ঞানীদের

পুলিশ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে স্বামীর রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন তিনি। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলে সেই সুযোগে ভাই গোবিন্দ ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করে তাঁকে। পুলিশকে ফাঁকি দিতে গল্প বানিয়ে রেখেছিলেন ভাই, বোনে মিলে।

ঘটনার পরদিন সকালে মীনা দেবীই স্বামীর খুন হয়ে যাওয়ার খবরটা পুলিশকে ফোন করে জানান। পুলিশকে বলেন, ওই রাতে স্বামীর দুই বন্ধু বাড়িতে এসেছিলেন। খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁরা তিনজনে একটি ঘরে শুয়ে পড়েন। আর তিনি অন্য একটি ঘরে ছিলেন। পর দিন সকালে উঠে দেখেন, স্বামীর ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। খুলে ভিতরে ঢুকতেই স্বামীকে এই অবস্থায় দেখতে পান। আর দুই বন্ধু বেপাত্তা।

মীনার অভিযোগ মতো পুলিশ দুই বন্ধুর খোঁজ করতে শুরু করে। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তথাকথিত দুই বন্ধুর সম্পর্কে মীনাকে জেরা করে পুলিশ যা পাচ্ছিল, তাতে প্রচুর অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। পুলিশের অন্য সন্দেহ বাড়তে থাকে। অবশেষে তদন্তের কিনারা হয় ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে থেকে। ঘটনার দিন রাত ৩টে নাগাদ মীনার ভাই গোবিন্দ ওই বাড়ি থেকে একটা ওড়না হাতে বেরিয়ে আসছেন, এই ছবি দেখেই সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় পুলিশের। এর পরই তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। চাপের মুখে ভেঙে পড়ে দু’জনেই স্বীকার করেছেন খুনের কথা। আর সেই জেরাতেই বেরিয়ে এসেছে এই খুনের নেপথ্য কাহিনী। দোষ লাঘব করতে স্বামীর ‘আবদার’ আর অত্যাচারের গল্পটাও বানানো নয় তো? প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তদন্তকারীদের ধারণা, ছেলে সন্তানের জন্য লাগাতার অত্যাচারের কথাটা মিথ্যে নয়।

Delhi Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy