গরম পড়লে মাথাব্যথা, বৃষ্টি নামলে মাথায় যন্ত্রণা, অফিসে জরুরি মিটিং চলছে, মাথায় হঠাৎ করে ব্যথা শুরু হল। আর যেমন-তেমন ব্যথা নয় যে, এক বার হল আর সেরে গেল। এ ব্যথা শুরু হলে কমার নাম করে না। মাথার এক পাশ থেকে শুরু করে, গোটা মাথা জুড়েই যন্ত্রণা হতে থাকে। টানা দুই থেকে তিন দিন থাকতে পারে ব্যথা, সঙ্গে বমি বমি ভাব, মাথাঘোরার সমস্যা তো রয়েছেই। সাধারণ মাথাব্যথার চেয়ে অনেকটাই আলাদা মাইগ্রেনের যন্ত্রণা। মাইগ্রেন কেন হয়, তার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। অনেক চিকিৎসক বলেন, এই ব্যথা জিনগত। আবার পরিবেশের প্রভাবও রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, বেশ কিছু খাবার থেকেও মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে। বিশেষ করে বাঙালি হেঁশেলের অতিপরিচিত তিন সব্জি মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে।
আমেরিকার ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ মাইগ্রেন ডিজ়অর্ডার’ গবেষণাটি করেছে। দাবি করা হয়েছে, আলু, টম্যাটো ও পেঁয়াজ থেকে মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়তে পারে। আসলে দোষটা সব্জির নয়, এতে থাকা বেশ কিছু উপাদানের। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, হিস্টামিন, টাইরামিন ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো উপাদান রক্তে মিশলে নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়, যা থেকে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা বাড়তে পারে। ওই তিন সব্জিতে এমনই কিছু উপাদান রয়েছে।
টম্যাটো
টম্যাটো পুষ্টিকর সব্জি। যে কোনও তরকারি, মাছ-মাংস বা স্যালাডে লাগে। তবে এর মধ্যে থাকা হিস্টামিন ও স্যালিসাইলেট যৌগ মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। টম্যাটোয় প্রচুর পরিমাণে গ্লুটামেট ও সোলোনিন নামক যৌগ থাকে, যা কিছু মানুষের শরীরে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। যাঁদের আগে থেকেই মাইগ্রেনের সমস্যা আছে অথবা ঘন ঘন প্যানিক অ্যাটাক হয়, তাঁদের বুঝেশুনে খেতে হবে। তবে গবেষকেরা জানাচ্ছেন, তাজা টম্যাটোর চেয়ে টম্যাটো কেচআপ, ফ্রোজ়েন টম্যাটো বা প্যাকেটবন্দি টম্যাটোর জুস বা স্যুপ বেশি ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন:
আলু
দোকান থেকে কিনে আলুর চিপ্স, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই রোজ খেতে শুরু করলে মুশকিল। আলু যদি আরও কোনও রাসায়নিক বা প্রিজ়ারভেটিভের সঙ্গে মেশে, তা হলে এতে সোলোনিন নামক একটি উপাদানের আধিক্য ঘটে। সোলোনিন এক প্রকার নিউরোটক্সিন, যা স্নায়বিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। মাইগ্রেনের সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের চিপ্স, ইনস্ট্যান্ট ম্যাশড পোট্যাটো বা আলু দিয়ে তৈরি যে কোনও জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
পেঁয়াজ
তীব্র মাইগ্রেন থাকলে কাঁচা পেঁয়াজ খেতে বারণই করা হয়। পেঁয়াজে থাকে সালফার, যা রক্তে মিশে স্নায়বিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। পেঁয়াজের অ্যালিসিন নামক উপাদানও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে প্রদাহের কারণ হতে পারে। পেঁয়াজ যদি দীর্ঘ সময় কাটা অবস্থায় ফেলে রাখা হয় বা ফ্রিজে রাখা বাসি পেঁয়াজ খাওয়া হয়, তা হলে এতে টাইরামিন নামক এক ধরনের উপাদান তৈরি হয়, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।