Advertisement
E-Paper

‘মঙ্গলা, ভোগ, অপরাহ্ন, সায়াহ্নকাল, শয়ন’! দৈনিক পাঁচ দফা আরতি, পূজা শুরু হয়ে গেল জ্ঞানবাপীতে

জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জ্ঞানবাপী লাগোয়া কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুরোহিত আরতি ও পূজার্চনা করেছেন। হিন্দু পক্ষের দাবি, ৩১ বছর পরে আবার আরতির ঘণ্টা বাজল ‘ব্যাস কা তহখানা’য়।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৪
জ্ঞানবাপীর তহখানায় শুরু হল আরতি, পূজাপাঠ।

জ্ঞানবাপীর তহখানায় শুরু হল আরতি, পূজাপাঠ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘সিল’ করা একটি তহখানায় হিন্দু ভক্তদের পূজার্চনার জন্য বুধবার অনুমতি দিয়েছিল বারাণসীর জেলা আদালত। জেলা বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেসের সেই নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার বিকেলেই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয়ে গেল আরতি এবং পুজোপাঠ। সেই পুজোর ছবি এবং ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল।

বিচারক বিশ্বেসের নির্দেশ ছিল এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যারিকেড সরিয়ে ‘ব্যাস কা তহখানা’-কে পুজোর জন্য প্রস্তুত করে দিতে হবে। তার পরেই শুরু হয় প্রশাসনিক তৎপরতা। সূত্রের খবর, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সাধারণ ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে ভূগর্ভস্থ ওই কক্ষ। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দৈনিক পাঁচ দফা আরতি-পূজাপাঠ হবে জ্ঞানবাপীর তহখানায়। ভোর সাড়ে ৩টেতে ‘মঙ্গলা’, দুপুর ১২টায় ‘ভোগ’, বিকেল ৪টেতে ‘অপরাহ্ন’, সন্ধ্যা ৭টায় ‘সায়াহ্নকাল’ এবং রাত সাড়ে ১০টায় ‘শয়ন’।

জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জ্ঞানবাপী লাগোয়া কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পুরোহিতই আরতি ও পূজার্চনা করেছেন বৃহস্পতিবার। দু’টি তহখানার মধ্যে একটিতেই হিন্দু ভক্তদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে বারাণসী জেলা আদালত। জ্ঞানবাপী মসজিদ লাগোয়া কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের বিখ্যাত নন্দীমূর্তির মাত্র ২০ ফুট দূরেই রয়েছে ‘ব্যাস কা তহখানা’। তার লাগোয়া আরও একটি ভূগর্ভস্থ কক্ষেও দেব-দেবীদের মূর্তি রয়েছে বলে দাবি হিন্দু পক্ষের। যদিও সেখানে পুজোপাঠের অনুমতি দেয়নি বারাণসী জেলা আদালত। এখনও অনুমতি দেওয়া হয়নি পাশের ‘সিল’ করা ওজুখানায় ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র।

২০২২ সাল থেকে আদালতের নির্দেশে মসজিদের ওজুখানা অংশটি ‘সিল’ করে রাখা হয়েছে। ‘স্বয়ম্ভূ জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বর’ নামে পরিচিত ওই অংশেই প্রাচীন শিবলিঙ্গ মিলেছে বলে হিন্দু পক্ষের দাবি। মসজিদ কমিটির দাবি, সেটি আদতে ফোয়ারা। সোমবারই হিন্দুদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে, ওই শিবলিঙ্গের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা হোক এবং যেখানে সেটি পাওয়া গিয়েছে, সেখানে প্রত্নখননের অনুমতি দেওয়া হোক। মুসলিম পক্ষের পাল্টা দাবি, মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার দাবি, ১৯৯১ সালের ‘ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন’-এর পরিপন্থী।

নন্দীমূর্তির কয়েক ফুট দূর থেকেই শুরু হচ্ছে জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিসর। মাঝখানে রয়েছে অস্থায়ী ধাতব বেড়া। সূত্রের খবর, মসজিদের মূল গেট ব্যবহার না করে হিন্দু ভক্তদের জন্য ওই বেড়া সরিয়ে ‘ব্যাস কা তহখানা’-য় যাওয়ার ব্যবস্থা করা হতে পারে। জ্ঞানবাপী মসজিদে ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’র যে রিপোর্ট ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই) জমা দিয়েছে এবং তার ভিত্তিতে আদালত বুধবার যে রায় ঘোষণা করেছে ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র তরফে আগামী বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানানো হতে পারে। মসজিদ কমিটির আইনজীবী মুমতাজ আহমেদ বলেছেন, ‘‘বারণসী আদালতের রায়কে আমরা হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানাব।’’

হিন্দু পক্ষের দাবি, ‘ব্যাস কা তহখানা’ দীর্ঘ দিন ধরে ‘ব্যাস’ পুরোহিত বংশের দখলে ছিল। তাঁরা এক সময় ওখানে বসবাসও করতেন। শৈলেন্দ্রকুমার পাঠক ব্যাস নামে ওই বংশের পুরোহিত আদালতে জানিয়েছেন, ১৯৯৩ সালের গোড়া পর্যন্ত তাঁরা ওখানে পুজো করেছেন। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে উত্তেজনা ঠেকাতে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিংহ যাদবের সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন পুরোহিত ছিলেন সোমনাথ ব্যাস। শৈলেন্দ্র সোমনাথের উত্তরাধিকারী হিসাবে আবার পুজো করার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। জেলাশাসককে ওই তহখানার রিসিভার হিসাবে নিয়োগ করার আবেদনও করেন। জ্ঞানবাপীতে পুজো করার অনুমতি চেয়ে স্থানীয় পাঁচ হিন্দু মহিলার তরফেও আদালতে পৃথক আর্জি জানানো হয়েছিল। সেই মামলার সূত্রেই জ্ঞানবাপীতে এএসআই সমীক্ষা এবং আরতি-পূজার্চনার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Gyanvapi Mosque Gyanvapi Masjid Kashi Vishwanath Temple varanasi Aarti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy